চট্টগ্রাম সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

বন্যায় ৩০ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ আগস্ট, ২০২৩ | ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ

বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমির ফসল। আমনের বীজতলা ও রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন আমন চারা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা।

 

কৃষি অধিদপ্তর জানায়, ৩ আগস্ট থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এসময়ে আউশ ধান, আমনের বীজতলা, আমনের আবাদ ও শরৎকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রাথমিক হিসাবে ২৯ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে আউশ ধানের ৬ হাজার ১৩ হেক্টর জমির ধানের ক্ষতি হয়েছে। দ-ায়মান আছে ৩৩ হাজার ৭১৯ হেক্টর। তিন হাজার ৭৯৪ হেক্টর জমির আমনের বীজতলার ক্ষতি হয়েছে। দ-ায়মান আছে ৬ হাজার ৬৫৯ হেক্টর। রোপা আমনের ক্ষতি হয়েছে ১৪ হাজার ৪৯৬ হেক্টর জমির। দ-ায়মান আছে ৫১ হাজার ১৩০ হেক্টর। শরৎকালীন ৫ হাজার ৩৮৭ হেক্টর সবজি তলিয়ে গেছে।

 

চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচারক মো. আবদুচ ছোবহান পূর্বকোণকে বলেন, ২২-২৩ শতাংশ জমিতে আমন রোপণ করা হয়েছিল। সেই হিসাবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হবে না। একই সঙ্গে আমনের বীজতলার সংকট হওয়ার আশঙ্কা নেই। তারপরও আমন বীজের সংকট মোকাবিলার জন্য বিআরডিসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বীজ সরবরাহের আশ^াস দিয়েছে।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩৮ হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে চারা রোপণ শুরু হয়।

 

কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের মধ্যে লোহাগাড়ায় কিছুটা চারা রোপণ করা হয়েছিল। সাতকানিয়া ও চন্দনাইশে বেশি রোপণ করা হয়নি। আশা করছি, পানি নামার পর সেখানের বড় ধরনের সংকট হবে না।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, টানা বৃষ্টি, জোয়ার-জলোচ্ছ্বাস ও বন্যায় নদ-নদীর পানি বিপদসীমায় প্রবাহিত হয়। যার প্রভাব পড়ে ধানী জমিতে। জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার পানিতে ডুবে যায় আউশ, আমনের বীজতলা, রোপা আমন ও শরৎকালীন সবজি। খাল ও নদীতে পানি কমার পরও ফসলের জমি এখনো পানিতে ডুবে রয়েছে।

 

কৃষি কর্মকর্তা আবদুচ ছোবহান বলেন, ব্রি ধান ২২ ও ২৩ ধান একটু দেরিতে রোপণ করা হয়। পানি নামার পর ডোবা বীজতলা পরিচর্যা করে চারা রোপণের উপযোগী করার চেষ্টা করা হবে। এছাড়াও নতুন করে বীজতলা তৈরি করে চারা রোপণ করার প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি বলেন, আগে ২৫-৩০ দিনে চারা রোপণ করা হতো। এখন ১৫-১৬ দিনে চারা রোপণ করাই উত্তম।

 

চলতি মৌসুমে আমন ধান রোপণের সময় খরায় পড়েছিল। চারা রোপণের বৃষ্টিপাত না হওয়ায় উপযুক্ত সময় চারা রোপণ করতে পারেনি চাষিরা। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বৃষ্টি হওয়ার পর পুরোদমে চারা রোপণ শুরু করেন চাষিরা।

 

আমন আবাদ হচ্ছে পুরোটায় বৃষ্টির পানিনির্ভর। জুন-জুলাই মাসে বৃষ্টির পানিতে আমনের চারা রোপণ শুরু হয়।

 

বোয়ালখালীর আমুচিয়া, কড়লডেঙ্গা ও পটিয়ার ধলঘাট এলাকার চাষি রতন দে বলেন, বীজতলা তো আগেই প্রস্তুত ছিল। বৃষ্টিপাত হওয়ার পর আমন চারা রোপণ শুরু করেছিলাম। এখন বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নামার পর নতুন করে বীজতলা তৈরি করে চারা রোপণ করতে হবে।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট