কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু হয়েছে। শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ শুরু হয়।
মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের এমডি আবুল কালাম আজাদ, কোল পাওয়ারের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. সাইফুর রহমান, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মনোয়ার হোসেন, রোকনজ্জামান ও সিকিউরিটি অফিসার আলফাজ উদ্দিনসহ একটি টিম উৎপাদনের কাজ শুরু করেন।
দুপুর ১২টার দিকে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে চুল্লি থেকে ধোঁয়া বের হয় এবং পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ শুরু করা হয়। প্রথম দিনে তেল দিয়ে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এবং তা জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। শনিবার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন চালু থাকবে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হবে। ইতিমধ্যে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ২ লাখ টন কয়লা সংরক্ষণ রয়েছে বলে জানা গেছে।
আরও জানা যায়, বর্তমান সরকারের মেগাপ্রকল্পগুলোর অন্যতম হচ্ছে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র। জাপানের উন্নয়ন সংস্থার (জাইকা) সহায়তার প্রায় ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি নির্মিত হচ্ছে। এ জন্য সরকার মহেশখালীর সাগরতীরের মাতারবাড়িতে এক হাজার ৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, জাহাজ থেকে সরাসরি ট্যাংকে কয়লা আনলোড করার জন্য প্রকল্প এলাকায় দুটি জেটির পাশাপাশি ১.৭ মিলিয়ন টন স্টোরেজ ক্ষমতার চারটি ট্যাংক এরই মধ্যে নির্মিত হয়েছে। ট্যাংকগুলোর ৬০ দিনের জন্য কয়লা সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে। আর জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড করতে দেড় থেকে দুই দিন সময় লাগবে। এ ক্ষেত্রে কয়লা খালাস করা পরিবেশবান্ধব হবে। কারণ কয়লা সরাসরি জেটি থেকে ট্যাংকে আপলোড করা হবে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। ইতিমধ্যে আগামী মার্চ বা এপ্রিল মাসে এ কেন্দ্রটি পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ চলবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
তিনি বলেন, এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট রয়েছে। প্রথম ইউনিটটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে, যা সফল হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ডিসেম্বরে উৎপাদন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামোর কাজ এরই মধ্যে ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। তবে সার্বিক ভৌত অবকাঠামোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৯০ শতাংশ। এতে জাতীয় গ্রিডে ১২৫ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হবে। ইউনিটটির পরীক্ষামূলক উৎপাদনের সফলতা পেলে বিদ্যুৎ সরবাহ নিয়মিত অব্যাহত থাকবে। এটি আগামী বছর বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে। তবে এর আগেও বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন চূড়ান্তভাবে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ