চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নীরব ভূমিকায় বনবিভাগ

চুনতি বনাঞ্চলে অবৈধ দখলের রাজত্ব

১২ জুন, ২০২৩ | ১১:৫৭ অপরাহ্ণ

লোহাগাড়ার চুনতিতে বনবিভাগের সরকারি জায়গায় পাহাড় কেটে গড়ে উঠছে নিত্য নতুন অবৈধ স্থাপনা। এ যেন সরকারি জায়গা দখলের মহোৎসব। অবৈধভাবে নির্মিত এসব স্থাপনার কারণে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র। হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ের চিহ্ন।

অথচ, বনজ সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণে লোহাগাড়ায় রয়েছে দু’টো বনরেঞ্জ কার্যালয়। একটি পদুয়া বনরেঞ্জ কার্যালয় এবং অপরটি চুনতি বনরেঞ্জ কার্যালয়। চুনতি বনরেঞ্জ কার্যালয়ের অধীনে রয়েছে তিনটি বনবিট কার্যালয়। এগুলো হল যথাক্রমে সাতঘর বনবিট, বড়হাতিয়া বনবিট ও উত্তর হারবাং বনবিট। উপজেলাধীন চুনতি ইউনিয়নস্থ সাতঘর বনবিট এলাকার বনাঞ্চল অন্যতম। সংযুক্ত রয়েছে দক্ষিণে পার্বত্য বান্দরবান জেলার লামা থানাধীন আজিজনগর। অপরদিকে রয়েছ চকরিয়া উপজেলার হারবাং এলাকা এবং তৎসংশ্লিষ্ট চুনতি অভয়ারণ্য। ছায়াঘেরা, পাখিডাকা, বনবিথীঘেরা, বন্য পশু-পাখির কলতানে মুখরিত এ বনভূমির অপরূপ সৌন্দর্য ও মনোলোভা দৃশ্য অতুলনীয়।

এ বনভূমির পাশের সমতল জায়গায় ক্রমশঃ গড়ে ওঠে অসংখ্য বসতবাড়ি ও গ্রাম্য দোকানপাট। কালের আবর্তন- বির্তনে মানুষের মন-মানসিকতার পরিবর্তন হতে শুরু করে। জনসংখ্যার চাপে চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় অভাব-অনটন। অভাব-অনটন পূরণে মানুষ হচ্ছে বেপরোয়া। আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে কোন কোন অসাধু কর্মকর্তা অবৈধ উপার্জনে হয়ে ওঠেন এক চোখা ক্ষুধার্ত হরিণের মতো। এহেন প্রবণতায় সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেকেই আপন স্বার্থে অন্যায় পথে পা বাড়ায়। এর সুস্পষ্ঠ প্রমাণ পাওয়া যায় সাতঘর বনবিটের আওয়াধীন বনাঞ্চলে।

সম্প্রতি এলাকা পরিদর্শনে দেখা গেছে, বনজ সম্পদ খেকোদের করাল গ্রাসে ধ্বংস হচ্ছে বিট সংশ্লিষ্ট পুরো বনাঞ্চল। বেদখল হচ্ছে বনভূমি এবং ধ্বংস হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবশ। বিশেষ করে ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন বনাঞ্চল বেদখল হয়ে যাচ্ছে ক্রমশঃ। এতে কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।

বিশেষ করে মাস্টার পাড়া ও নয়া পাড়া, কান্দিলা মার্কেটের দক্ষিণ পার্শ্বে, মনছুরা বিল সাতের আগা, বাইর্গ্যা বিল এলাকা, দুলিক্ষা পাহাড়সহ আরো বিভিন্ন স্থানে পাহাড়-টিলা সমতল করে নিত্য-নতুন বসতবাড়ি নির্মিত হয়েছে এবং নির্মাণ হচ্ছে। বনভূমি অবৈধভাবে দখল করে এভাবে অবৈধস্থাপনা নির্মাণ কতটুকু আইনসঙ্গত তা খতিয়ে দেখার জন্য বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

এ প্রসঙ্গে সাতঘর বনবিট কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, অতীতে হয়তো কেউ কেউ কোননা কোন উপায়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ওই সুযোগ সহজে কেউ পাচ্ছেন না। এরপরও অজ্ঞাতভাবে কেউ যদি আইন অমান্য করে বনবিভাগের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেন, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট