চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কুমিরা ইউনিয়নের মসজিদ্দা দেলিপাড়ার কেরামত আলী কারিগর বাড়ির একটি চলার পথ নিয়ে বৌ ও শাশুড়ির মধ্যে তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ উত্তেজনায় ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়ছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রতিবেশিসহ বিভিন্ন মহল।
শাশুড়ির অভিযোগ ছেলেরা তাকে দেখভাল না করায় তিনি নিজের জায়গায় একটি ঘর তৈরির জন্য প্রস্তুতি নিলে বৌমা সাজানো নাটক তৈরি করে তার যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে অপপ্রচার করছেন। অন্যদিকে বৌমার অভিযোগ, শাশুড়ি তার চলাচলের পথ বন্ধ করে রাখায় গত ৫ দিন ধরে তিনি অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে অভিযোগ করেছে দু’জনেই।
শুক্রবার (২ জুন) বিকালে সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শাশুড়ি ঐ বাড়ির বাসিন্দা মৃত মো. গনির স্ত্রী আরফা খাতুন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি তার ৪ নম্বর ছেলে প্রবাসী সেলিমের ঘরে বসবাস করছিলেন। গত ৮-৯ মাস আগে তার পুত্রবধূ (সেলিমের স্ত্রী) মনোয়ারা বেগম গোপনে তার কাছ থেকে স্বামীর কাছ থেকে প্রাপ্ত ২ আনা সম্পত্তি কৌশলে নিয়ে নেবার পাঁয়তারা করেন। তিনি এ সম্পত্তি দিতে অস্বীকার করলে মনোয়ারা বেগম অত্যাচার শুরু করে। বাধ্য হয়ে তিনি তৃতীয় ছেলে মো. হোসেনের কাছে চলে আসেন। সেখানেই থাকছেন। অন্য ছেলেরা তার কোন ভরন পোষণ দিচ্ছে না। এক পর্যায়ে স্থানীয় মেম্বারের উপস্থিতিতে সম্পত্তির বন্টন নামা করার পর তিনি ১.৩১ শতাংশ সম্পত্তির মালিক হন। পরে ছেলে হোসেন তার পাওয়া সম্পত্তি ও ক্রয়কৃত সম্পত্তির উপর একটি দালান নির্মাণের কাজ শুরু করলে পুত্রবধূ মনোয়ারা বাধা দেন। বাধ্য হয়ে পরবর্তীতে শাশুড়ি তার প্রাপ্ত সম্পত্তির উপর ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিয়ে ঘেরা-বেড়া দিলে পুত্রবধূ মনোয়ারা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করেন যে শাশুড়ি তার চলাচলের রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়ায় তিনি গত ৫ দিন যাবত শিশুপুত্রকে নিয়ে অবরুদ্ধ। এ অবস্থা থেকে মুক্তি কামনা করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। পাশাপাশি একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করলে চলাচলের পথ বন্ধ করে অবরুদ্ধের মতো অভিযোগ থাকায় তা ভাইরাল হয়ে যায়।
আরফা খাতুন দাবি করেন, প্রকৃতপক্ষে মনোয়ারাসহ অন্য পুত্রদের চলাচলের জন্য ৫ ফুট রাস্তা খোলা আছে। কিন্তু মনোয়ারা তার জায়গার উপর দিয়েই রাস্তা চান। যা উদ্দেশ্যে প্রনোদিত।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনের আগে মনোয়ারা প্রশাসন ও থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করে দাবি করেন, তার চলাচলের রাস্তার উপরেই শাশুড়ি ঘর নির্মাণ করতে চান। এই ঘর নির্মাণ হলে তিনি কোনদিন বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন না। তাই বাড়ি নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।
অন্যদিকে শাশুড়ি ও বৌয়ের সাংবাদিকদের কাছে এই পরস্পর বিরোধী বক্তব্য ইতোমধ্যে সীতাকুণ্ডে বহুল আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা কি তা জানতে এবং কেন বিষয়টির সুরাহা হচ্ছে না তা নিয়ে নানান প্রশ্নে মেতেছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, একটি চলাচলের রাস্তা নিয়ে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ করছেন বৌমা ও শাশুড়ি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। কার জায়গা কোথায় আছে দেখে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ