চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এক গৃহবধূর অগ্নিদ্বগ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার বাঁশবাড়িয়াস্থ গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত গৃহবধূর লাশ দ্বগ্ধ হলেও তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। ফলে এটি পরিকল্পিত হত্যা বলে ধারণা করছে পুলিশ।
নিহত গৃহবধূর নাম রোখসানা আক্তার (২৩)। তিনি উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর বাঁশবাড়িয়া রহমতের পাড়ার গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া রহমতের পাড়ার গৃহবধূ রোখসানা আক্তারের অগ্নিদ্বগ্ধ লাশ নিজ ঘরে পড়ে আছে। এমন খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যায় সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেন।
স্থানীয়রা জানান, নিহত রোখসানা উপজেলার মাদামবিবিরহাট নেভী রোডের বাসিন্দা নুর আলমের মেয়ে। গত প্রায় একবছর আগে বাঁশবাড়িয়ার গোলাম কিবরিয়ার সাথে তার বিয়ে হয়। বর্তমানে তিনি ৬-৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
এলাকাবাসী জানান, একই বাড়িতে গোলাম কিবরিয়ার পরিবারের সাথে তার ভাইয়ের পরিবারও বসবাস করছেন। জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। কিন্তু এই ঘটনা কিভাবে ঘটল তা কেউ বুঝতে পারছেন না। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে অসংখ্য কৌতুহলী এলাকাবাসী সেখানে ভিড় করেন।
তাদের একজন স্থানীয় বাসিন্দা তাঁতী লীগ নেতা এম.এইচ হেলাল জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখলাম অগ্নিদ্বগ্ধ লাশটি বিছানার উপর পড়ে আছে। তবে লাশের অবস্থা দেখে এ মৃত্যু রহস্যজনক বলে মনে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যদি গায়ে আগুন লাগত তাহলেও মহিলাটি কিছুটা ছোটোছুটি করত কিংবা আর্তচিৎকার করত। কিন্তু কেউই তার কোন চিৎকার শোনেনি। এছাড়া ঘরে ছোটোছুটির মতো কোন চিহ্নও দেখা যায়নি।
বাঁশবাড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, আমি ঘটনার খবর শুনে বিকেলে ঐ বাড়িতে যাই। তখন পুলিশ লাশটি খতিয়ে দেখছে। কি করে ঐ গৃহবধূ মারা গেছে তা পুলিশ খতিয়ে দেখবে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যা। কারণ, ঐ গৃহবধূর মাথায় একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে। ধারণা করছি হত্যা শেষে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেবার জন্য তার গায়ে লেপ-কাঁথাতে কেরোসিন বা অন্য কোন দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন লাগানো হয়। কিন্তু ঘরের পরিবেশ এবং অন্যান্য অবস্থা দেখে এটি যে আত্মহত্যা নয় তা অনেকটাই নিশ্চিত করে বলা যায়। এছাড়া শুনতে পাচ্ছি নিহত গৃহবধূ অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ফলে আমরা লাশ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেছি। এ বিষয়ে মামলা দায়ের হবে।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ