চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

শিক্ষার্থীদের নৈতিক অবক্ষয় রোধে লোহাগাড়া ইউএনও’র কর্মতৎপরতা

লোহাগাড়া সংবাদদাতা

২৪ মে, ২০২৩ | ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ

একজন সরকারি কর্মকর্তা যে মানবতাবাদী, সমাজ হিতৈষী ও শিক্ষানুরাগী তার স্পষ্ট প্রমাণ লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ শরীফ উল্যাহ। সাম্প্রতিকালের একান্ত এক সাক্ষাৎকারে তিনি মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন, অপসংষ্কৃতির করাল গ্রাস থেকে মুক্ত রাখতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নৈতিক অবক্ষয় রোধ এবং পিতা-মাতার দ্বারা বাধ্য হয়ে লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে মাঠপর্যায়ে তার কর্মতৎপরতার এক ভাষাচিত্র উক্ত প্রতিনিধির কাছে তুলে ধরেন।

 

তিনি বলেন, ধনী-গরীব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত প্রশ্ন নয় বরং স্ব-স্ব অবস্থানে মাতা-পিতা সচেতন হলে সন্তানেরা সৎচরিত্রবান হয়। বিশেষ করে শৈশবের পারিবারিক শিক্ষাই সন্তানদের আগামীদিনের পথ চলার পাথেয়। তাই তিনি তার দাপ্তরিক কাজকর্মের ব্যস্ততার পরও মাধ্যমিক পর্যায়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে মানবিক মূল্যবোধে জাগ্রত করে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

তিনি আরও বলেন, অতীতে রাতের বেলায় কয়েকজন শিক্ষক সাথে নিয়ে কোন কোন এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার খোঁজখবর নিয়েছেন। মেধা যাচাই পরীক্ষার আয়োজন করে নিজস্ব অর্থায়নে কৃতী শিক্ষার্থীদেরকে পুরস্কৃত করে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষাসামগ্রী ও বিতরণ করছেন তিনি। মাতা-পিতা ও অভিভাবক মহলকে সচেতন করতে সম্প্রতি তিনি নতুন এক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

 

উপজেলা মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কাছে সন্তানদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহবান জানিয়ে পৃথক পৃথক পত্র প্রেরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। পত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার প্রভৃতির অপব্যবহার, মাদকাসক্তি, কিশোর গ্যাং সৃষ্টি ও অসামাজিক কার্যকলাপ প্রভৃতি অপরাধ থেকে সন্তানদের মুক্ত রাখতে সদায় সতর্ক দৃষ্টি রাখার কথা তিনি উল্লেখ করেছেন।

 

এছাড়া আরও উল্লেখ রয়েছে, সততা, নৈতিকতা, মানবিক গুণাবলি, ধর্মীয়- পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম প্রভৃতি র্চচায় ভাটা পড়তে শুরু করেছে। যে কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও যুব সমাজ বিপথগামী হচ্ছে। অভিভাবক মহলের কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি ও সচেতনায় সন্তানেরা এহেন অভিশাপ থেকে মুক্ত থাকব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এমনকি ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ গঠনে সন্তানদের গড়ে তোলার ব্যাপারে অভিভাবক মহলের করণীয় বিষয়সমূহ তিনি পত্রে উল্লেখ করেছেন বলে জানান।

 

এ প্রসঙ্গে লোহাগাড়া শাহপীর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর-এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাপ্তারিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে যে কর্ম-তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তার এহেন কর্ম-তৎপরতায় উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যায়ে আমূল পরিবর্তন এসেছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

 

এ প্রসঙ্গে পুটিবিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সম্প্রতি ঘোষিত উপজেলা শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদেরকে লেখাপড়ায় মনোযোগী করে তুলতে ইউএনও যে কর্ম-তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তার বিনিময়ে শিক্ষাঙ্গনে এক বিরাট সফলতা বয়ে এসেছে। যা আগামীতে মাইলফলক হিসেবে প্রেরণা যোগাবে।

 

একই প্রসঙ্গে আমিরাবাদ সুখছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, এই কর্ম-তৎপরতা অন্যের জন্য অনুকরণীয় বিষয়। বিশেষ করে নৈশকালীন হোম ভিজিট শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলের মধ্যে নতুন ভাবে সাড়া জাগিয়েছে।

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন