চট্টগ্রাম বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

ধোপাছড়ির ৭ গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে সেতু নির্মাণের দাবি

পারাপারে বাঁশের সাঁকোই ভরসা তাদের

মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশ

২১ মে, ২০২৩ | ৭:৩৬ অপরাহ্ণ

উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়নের পূর্বাংশে ৭ গ্রামবাসীর যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। ইউনিয়নটি দু’ ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে ধোপাছড়ি ছড়াটি। বর্তমান সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী, দেশে কোথাও বাঁশের সাঁকো থাকবে না। কিন্তু সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হতে চললেও ধোপাছড়িবাসীর যাতায়াতে এখনও ভরসা বাঁশের সাঁকোটি। এ স্থানে একটি সেতু হলে ধোপাছড়িবাসীর অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে সুবিধা বাড়ার সাথে সাথে বান্দরবানের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থাও নিশ্চিত হবে। তাতে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধোপাছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ সীমানায় শঙ্খ নদীর সাথে যুক্ত হয়েছে ধোপাছড়ি ছড়া। কথিত আছে এই ছড়াতে ধোপারা কাপড় কাচতো বলে এর নামকরণ হয়েছিল ধোপাছড়ি। আর এই ছড়া ধোপাছড়ি ইউনিয়নকে দু’ ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে শুরু থেকে। নদীর পূর্ব পাড়ে ৭টি গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে ডিঙ্গি বা নৌকা। একটি ব্রিজের অভাবে দু’ পাড়ের মানুষ ও শিক্ষার্থীরা বর্ষায় নৌকা এবং খরা মৌসুমে বাঁশের তৈরি সাঁকোর ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। এই দুর্ভোগ লাঘবে নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল আলীম বলেছেন, ছড়ার পূর্ব পাশে শঙ্খকূল, সেমিপাড়া, শামুকছড়ি, বটতলী, হিন্দু পাড়া, বড়ুয়া পাড়া, ভঙ্গুরু পাড়াসহ বান্দরবানের সাথে সংযুক্ত এই ইউনিয়ন। এ সকল গ্রামের মানুষের ভরসা একটিমাত্র বাঁশের সাঁকো।

এ সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও একটি ব্রিজ কপালে জোটেনি সাত গ্রামের মানুষের।

স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ জরুরি কোনো রোগীকে হাসপাতালে নিতে সাধারণ মানুষকে বর্ষায় নৌকা ও খরা মৌসুমে বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একটি ব্রিজের অভাবে এলাকার কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল পারাপারে দুর্ভোগের কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ধোপাছড়ি শীলঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইছহাক বলেন, এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নৌকা বা বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হয়। ব্রিজটি নির্মাণ হলে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন যথাসময়ে বিদ্যালয়ে আসা ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে রক্ষা পেত। ইতোপূর্বে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে আসার সময় পা পিছলে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে অনেক ছাত্রী। এমনকি বর্ষা মৌসুমে ডিঙ্গি নৌকা ডুবে বড় দুর্ঘটনায়ও পড়েছে অনেকে।

ধোপাছড়ি শীলঘাটা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি এম আমিনুল ইসলাম বলেছেন, ছড়ার পশ্চিম পাশে উচ্চ বিদ্যালয়, বাজার, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ থাকায় এ সকল এলাকার মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হয়ে সেবা নিতে আসতে হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পড়ালেখা থেকে অকালে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। বর্ষাকাল এলেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকার সবাই ডিঙ্গি নৌকায় নদী পারাপার হয়ে থাকে। কেউ অসুস্থ হলে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। এলাকার অসুস্থ রোগীদের এখন একমাত্র ভরসা পল্লী চিকিৎসকরাই।

ধোপাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলীম বলেন, এলাকাবাসীর স্বার্থে এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ খুবই জরুরি। ব্রিজ নির্মাণ হলে এলাকার পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর উন্নয়ন হবে। স্বাধীনতার পরে অনেক সংসদ সদস্য এসেছেন। তারা শুধু আশার বাণী শুনিয়েছেন, তবে সেতু নির্মাণ হয়নি। এ ব্যাপারে সড়ক বিভাগের গাফিলতি রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট