চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

এখনও বিদ্যুৎহীন টেকনাফের ২০ হাজার গ্রাহক, মোমবাতির চড়া দাম

টেকনাফ সংবাদদাতা

১৫ মে, ২০২৩ | ১০:৫৭ অপরাহ্ণ

ঘূর্ণিঝড় মোখায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে টেকনাফের বেশিরভাগ এলাকা। এতে বিদ্যুতের তার ও খুঁটি ভেঙে গেছে। গত দুইদিন ধরে বিদ্যুৎহীন পুরো টেকনাফ। এই সুযোগে টেকনাফের বাজারগুলোতে মোমবাতির দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পাঁচ টাকার মোমবাতি ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কিছু বাজারে মোমবাতিই নেই। পুরো এলাকাজুড়ে মোমবাতির জন্য হাহাকার চলছে।

 

সোমবার (১৫ মে) টেকনাফের বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

 

সাবারং ইউনিনের নয়াপাড়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, অনেকেই জেনারেটরের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। অনেক দোকানে মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে।

 

ব্যবসায়ীরা জানান, রবিবার সকাল থেকে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। তাই মোমবাতি জ্বালিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছি। বাজারে মোমবাতিও পাওয়া যাচ্ছে না।

 

নয়াপড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। তাই সবাই মোমবাতির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বাজারে গিয়ে মোমবাতিও পাওয়া যাচ্ছে না।

 

নয়াপাড়া বাজারে ব্যবসায়ী আব্দুল কালাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে টেকনাফ থেকে কোনো মালামাল আমাদের বাজারে আসছে না। তাই বাজারে মোমবাতিসহ অনেক নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে।

 

শাহপরীরদ্বীপের বাজারে গিয়েও মোমবাতি সংকটের কথা জানা গেছে। বাজারের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কয়েকদিন ধরে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। তাই মোমবাতির চাহিদা অনেক বেশি। গত কয়েকদিন ধরে টেকনাফ শহর থেকে কোনো মালামাল আমাদের বাজারে আসেননি। তাই মোমবাতিসহ অনেক পণ্যই শেষ হয়ে গেছে।

 

শাহপরীরদ্বীপের বাসিন্দা রহিমা খাতুন বলেন, আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। গত দুইদিন মোমবাতি দিয়েই রাত কাটিয়েছি। কিন্তু আজ বাজারে গিয়ে মোমবাতিও পাওয়া যায়নি। তাই অন্ধকারেই আছি। বিদ্যুৎ কখন আসবে তাও বলতে পারছি না।

 

আজ সোমবার সন্ধ্যার পর টেকনাফ পৌরসভা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ দোকানেই মোমবাতি জ্বালিয়ে ব্যবসা করছেন। কয়েকটি দোকানে জেনারেটরের মাধ্যমে বাতি জ্বালানো হয়েছে।

 

টেকনাফ পৌরসভার অলিয়াবাদ এলাকার ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া জানান, রবিবার থেকে তাদের বাজারে বিদ্যুৎ নেই। তাই মোমবাতির চাহিদা বেড়েছে। এজন্য ব্যবসায়ীরা বাড়তি দামে মোমবাতি বিক্রি করছেন।

 

মোজাম্মেল নামের এক বাসিন্দা বলেন, মোমবাতির জন্য আমাদের এলাকার হাহাকার চলছে। এই সুযোগে দোকানিরা মোমবাতির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পাঁচ টাকার মোমবাতি এখন ১৫ টাকা। ১০ টাকার মোমবাতি ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

 

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে টেকনাফ উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত ও বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ায় আজ দিনভর টেকনাফ পৌরসভা, সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ, হৃীলা, হোয়াইক্যং, বাহারছড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী। সাথে ছিলেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড চট্টগ্রাম জোনের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মোস্তফা কামাল, কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নির্বাহী প্রকৌশলী এমডি ইমতিয়াজ উদ্দিন, টেকনাফ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম আবুল বশর আজাদ ও ইনস্পেক্টর আতিকুর রহমান।

 

রাত সাড়ে ৯টায় টেকনাফ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম আবুল বশর আজাদ বলেন, টেকনাফ উপজেলার পৌরসভা, সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ, হৃীলা, হোয়াইক্যং, বাহারছড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করে দেখেছি ৩০টি খুঁটি ভেঙ্গে পড়ে আছে। তারমধ্যে ২০টি খুঁটি ঠিক করা হয়েছে। গ্রামাঞ্চল দূরে থাক, এখনও পৌর এলাকায় পর্যন্ত লাইন চালু করা সম্ভব হয়নি। ভিন্ন স্থান থেকে কর্মী এনেও কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। লাইন চালু হতে সময় লাগবে। যেখানে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ও লাইন রয়েছে সেখানে আমাদের লোকজন রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব লাইন চালু করা হবে।

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন