‘অনেকদিন পর বাড়িতে আসছি। এখানে যে পরিমাণ শীত, সেই তুলনায় ঢাকায় কোনো শীতই নাই,’ বলছিলেন উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের সন্তান হোসাইন রাব্বি। আবহাওয়া অফিসের বক্তব্যও অনেকটাই এর কাছাকাছি। শীতকালে কনকনে ঠান্ডা বলতে যা বোঝায়, তা এখন শুধু বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষই টের পাচ্ছে, বলে জানান আবহাওয়াবিদরা।-বিবিসি বাংলা
আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদ বলেছেন, এবছর মূলত রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে এবং সেইসাথে যশোর ও কুষ্টিয়ায় শৈত্যপ্রবাহ দেখা গেছে। এবার বাংলাদেশে কেন এত কম সংখ্যক শৈত্যপ্রবাহ পড়েছে? এর কারণ কী?
শীতের অনুভূতির ভিন্নতা ও কুয়াশা:
গত বছরের ডিসেম্বরে বলা হয়েছিলো যে কুয়াশার কারণে শীতের অনুভূতি বেশি হবে। তবে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদও আজ বলেন, শৈত্যপ্রবাহের সংখ্যা কমে গেলেও সামগ্রিকভাবে শীত কম। কুয়াশার কারণে কোথাও কোথাও শীতের তীব্রতা আছে।
আরেক আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, কাছাকাছি সময়ে এরকম আবহাওয়া দেখিনি। তার মতে, এ বছর সারা দেশের কোথাওই সেভাবে শীত পড়েনি। উত্তরবঙ্গে যে ঠান্ডা লাগছে, তা শৈত্যপ্রবাহের কারণে না। ওখানে শৈত্যপ্রবাহ ছিলই না কয়েকদিনে। ওখানে দিনের পবলা সূর্য নাই, তাই সেখানে তাপমাত্রা কম এবং মানুষের শীতের অনুভূতি বেশি।
শৈত্যপ্রবাহ কমার কারণ:
দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে গেলে শীত বেশি অনুভূত হয়। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, রাতের তাপমাত্রা কমতে পারছে না। গতবারও ঘন কুয়াশার কারণে দুই সপ্তাহের মতো দিনের তাপমাত্রা কমে গেছে।
বাংলাদেশে গত কয়েকবছরে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আসেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বছর এই সময়ে ওপর থেকে যে হিমেল হাওয়া নিচে নেমে আসার কথা। তার জন্য পশ্চিমা লঘুচাপ থাকতে হয়। পশ্চিমা লঘুচাপ তৈরি হয় ভূমধ্যসাগরে। ওখান থেকে কাশ্মীর হয়ে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। কিন্তু ওদিক থেকে এবার বাতাস ঢুকতে পারে নাই।
শৈত্যপ্রবাহ কম হওয়ার হওয়ার আরেকটি কারণ, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের বিচরণ। সাম্প্রতিক সময়ে সারা বছরের তাপমাত্রাই বেড়েছে ও বৃষ্টিপাত কমেছে।
পূর্বকোণ/ইব