সদ্য সমাপ্ত ভারত সিরিজের মাঝামাঝিতে নিজের অবসরের ঘোষণা দেন সাকিব আল হাসান। জানান দেশের মাটিতে খেলতে চান নিজের সবশেষ টেস্টটা। তবে তার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তা পড়ে গিয়েছিল শঙ্কায়।
অবশেষে সব শঙ্কা উড়িয়ে সাকিব বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আসছেন ঢাকায়, মিরপুরের মাটিতেই খেলবেন তার বিদায়ী টেস্ট। মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই টেস্ট শুরু হবে আগামী ২১ অক্টোবর।
এই সিরিজ খেলতে ঢাকায় বুধবার (১৬ অক্টোবর) পা রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা দল। তবে সাকিব আসবেন তার পরদিন, মানে বৃহস্পতিবার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের টিম অপারেশন্সের একটি সূত্র।
সাকিব এর আগে জুলাই মাসের শুরু থেকেই ছিলেন দেশের বাইরে। সরকার পতনের পর থেকে তিনি আর ঢাকায় পা রাখেননি। এরইমধ্যে তিনি ঘোষণা দেন ঢাকায় শেষ টেস্টটা খেলার। তবে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি সাকিবের এই চাওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
অবসরের ঘোষণার আগেও সাকিবের দেশে আসা নিয়ে কথা বলেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যরা। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ‘আশাবাদ ব্যক্ত করেন’ যে সাকিবকে গ্রেপ্তার করা হবে না। তিনি বলেন, সাকিবের বিরুদ্ধে স্রেফ একটা মামলা করা হয়েছে। মামলা হওয়া বা এফআরআই হওয়া মানে গ্রেপ্তার না। আমি আশা করি তাকে গ্রেপ্তার করা হবে না।
এরপর তার অবসর ঘোষণায় সাকিব ফাঁক রেখে দেন এই বলে যে, যদি সিলেক্টেড হই তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজেই হবে শেষ টেস্ট। বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ জানান, বিষয়টা সরকারের হাতে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এই বিষয়ে জানান, খেলোয়াড় সাকিবের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আছে। তবে ফ্যাসিস্ট সরকারের সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বিপক্ষে জনমনে তৈরি হওয়া ক্রোধের বিপরীতে নিরাপত্তা দেওয়ার নিশ্চয়তা চাওয়া অবান্তর। সেদিন ক্রীড়া উপদেষ্টা সাকিবকে তার রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করার বিষয়ে আহ্বান জানান। সাকিব সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে একটা ফেসবুক পোস্টও করেন, যেখানে জানান মাগুরার উন্নয়নের জন্য সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন তিনি।
এরপর খানিকটা নমনীয় সুরে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, তিনি (সাকিব) এমন একজন খেলোয়াড়, যার দেশের জন্য অনেক অবদান রয়েছে। তিনি যেহেতু বাংলাদেশে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে চান, আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই সেই সুযোগ তিনি পান।
গত ১৩ অক্টোবর মিরপুরের হোম অফ ক্রিকেট পরিদর্শনকালে সাকিবের বিষয়ে আবারও প্রশ্নের মুখে পড়েন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তখন তিনি বলেন, সাকিব বাংলাদেশের নাগরিক ও একজন ক্রিকেটার। তার আসা ও যাওয়ার (দেশে) ক্ষেত্রে তো আমি কোন বাধা দেখি না। তবে দেয়াললিখন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমনটা আমরা দেখেছি, এটা আসলে ইমোশনের ব্যাপার। আর যারা এটা করছে তাদেরও রাইটস আছে যেকোন আন্দোলন বা যেকোন কিছু করার।
এরপরই দেশে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু করেন সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক। আগামীকাল সে প্রক্রিয়া শেষে ঢাকায় পা রাখবেন তিনি। শুক্রবার থেকে সাকিব যোগ দেবেন দলের সঙ্গে। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম টেস্ট শেষেই সাকিব সাদা পোশাককে বিদায় বলবেন।
পূর্বকোণ/মাহমুদ