চট্টগ্রাম সোমবার, ০৮ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘বাজপাখি’ মার্টিনেজের বীরত্বে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস ডেস্ক

৫ জুলাই, ২০২৪ | ১২:০৭ অপরাহ্ণ

দলের হয়ে প্রথম পেনাল্টি নিতে এসেছিলেন লিওনেল মেসি। গোলরক্ষক আলেকজান্ডার ডমিঙ্গেজকে ভুল পথে পাঠিয়েছিলেন বটে। কিন্তু তার প্যানেককা শট বারপোস্টে লেগে চলে যায় উপরে।

 

তবে পেনাল্টিতে আর্জেন্টিনার ত্রাতা হয়েছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে আরও একবার নায়ক বনে গেলেন তিনি। তার বীরত্বেই ইকুয়েডরকে ৪-২ ব্যবধানে পেনাল্টিতে হারিয়ে সেমিফাইনালে গেল আর্জেন্টিনা।

 

ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচে শেষ সময়ে গোল হজম করে বিপাকেই পড়েছিল টিম আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসির শট মিস হলে তাতে সংশয় বেড়ে যায় আরও খানিকটা। কিন্তু এমি মার্টিনেজ ঠেকালেন আনহেল মেনা আর এলান মিন্দার শট। আর্জেন্টিনা গোল করল পরের চার শটেই।

 

পুরো ম্যাচে ইকুয়েডরের ঝটিকা আক্রমণের সামনে ভুগতে হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। প্রথমার্ধে একাধিকবার দল বিপদের মাঝে পড়লেও লিসান্দ্রো মার্টিনেজের গোলে স্বস্তির এক লিড পেয়ে যায় তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের একেবারে শেষে এসে গোল হজম করতেই হলো আলবিসেলেস্তেদের। পুরো ম্যাচেই ইকুয়েডরের লং বলের সামনে বিপাকে পড়েছিল আর্জেন্টিনা। শেষ পর্যন্ত বিপদটাও হলো সেখানেই।

 

হিউস্টনে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা যখনই জয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই যেন এলো ধাক্কা। যোগ করা সময়ের ১ম মিনিটে জন ইয়াবোয়াহর ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে ইকুয়েডরকে সমতায় ফেরান কেভিন রদ্রিগেজ। ১-১ গোলের সমতায় শেষ হলো নির্ধারিত নব্বই মিনিটের খেলা। কোপা আমেরিকার নিয়ম মেনে ম্যাচ চলে যায় সরাসরি পেনাল্টি শ্যুটআউটে। যেখানে গোলবারের নিচে নায়ক একজনই- এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

 

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচের দৃশ্যপট দখলে নেয় ইকুয়েডর। আর্জেন্টিনা যেখানে পুরো ৪৫ মিনিটে একবারই কেবল গোলে শট নিয়েছে, সেখানে বারবার আলবিসেলেস্তেদের ডিবক্সে হানা দিয়েছিল এনার ভ্যালেন্সিয়া-ময়সেস কেইসেডোরা। ম্যাচের ৬২ মিনিটে সমতায় ফিরতে পারত তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এনার ভ্যালেন্সিয়ার পেনাল্টি ফিরে আসে বার থেকে।

 

আর্জেন্টিনাকে এরপর আক্রমণে কিছুটা ব্যস্ত হতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সেটা হতাশাই বাড়িয়েছে শুধু। আর্জেন্টিনার হয়ে ৬৭ মিনিটে লিওনেল মেসিকে একটা শটই নিতে দেখা গিয়েছিল। আক্রমণভাগের এই দুর্বলতা নিশ্চিতভাবেই পরের ম্যাচে ভাবাবে কোচ লিওনেল স্কালোনিকে। রক্ষণভাগ আর মাঝমাঠে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিলেও হতাশা বাড়িয়েছে আর্জেন্টিনার ফ্রন্টলাইন।

 

ম্যাচের প্রথমার্ধেও চিত্রটা অনেকটা এমনই ছিল। প্রথমার্ধের ১০ থেকে ১৯ মিনিটের সময়ে ইকুয়েডরের সেরা দুই তারকা ময়সেস কেইসেডো এবং এনার ভ্যালেন্সিয়া রীতিমতো নাভিশ্বাস তুলেছিলেন আর্জেন্টাইন রাইটব্যাক নাহুয়েল মলিনার। তবে সেখান থেকে ফিরে আসতে আর্জেন্টিনাও সময় নেয়নি।

 

বল দখলে নিয়ে কিছুটা রয়েসয়ে আধিপত্য ফিরিয়ে এনেছে নিজেদের। আর তাতে ফলও এসেছে। লিওনেল মেসির কর্নার থেকে হেডে বল পেছনে পাঠিয়েছিলেন ম্যাক এলিস্টার। দূরের পোস্টে আনমার্কড ছিলেন লিসান্দ্রো মার্টিনেজ। বল সেখান থেকেই জড়ালেন জালে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই ডিফেন্ডারের গোলের সুবাদেই লিড নিয়ে বিরতিতে যায় কোপার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

 

প্রথমার্ধে লিড পেলেও আর্জেন্টিনাকে মাঠের খেলায় খুঁজে পেতে এদিন সময় লেগেছিল অনেকখানি। এনার ভ্যালেন্সিয়া, কেইসোডো এবং ১৭ বছরের তরুণ কেন্ড্রি পায়েজ ইকুয়েডরকে এগিয়ে রেখেছিলেন অনেকটা সময় পর্যন্ত। ২৯ মিনিটের আগ পর্যন্ত ইকুয়েডরের ৩ বিগ চান্সের বিপরীতে গোলে বড়রকমের সুযোগই তৈরি করা হয়নি আর্জেন্টিনার। এমনকি ম্যাচে তাদের প্রথম যুতসই আক্রমণের দেখা মিলেছিল ২৬ মিনিটে এসে।

 

এরপর গোল পেলেও দ্বিতীয়ার্ধে আরও একবার ভুলে যাওয়ার মতো ফুটবল ছিল আর্জেন্টিনার। তারপরে গোলবারের বিশ্বস্ত প্রহরী এমি মার্টিনেজ দলকে টেনে তুললেন সেমিফাইনালে। আগামীকাল ভেনেজুয়েলা এবং কানাডা ম্যাচের বিজয়ী দলকে শেষ চারে মোকাবেলা করবে আর্জেন্টিনা।

 

পূর্বকোণ/মাহমুদ

শেয়ার করুন