যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে লজ্জাজনক হারে সিরিজ খোয়ানোর পর মান রক্ষার ম্যাচে জয় পেল বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের দেয়ার ১০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শান্ত বাহিনী।
শনিবার (২৫ মে) রাতে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষটিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে স্রেফ ১০৪ রান করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ওই রান তাড়া করতে নেমে ৫০ বল আগেই জয় পায় বাংলাদেশ। যদিও আগের দুই ম্যাচ জেতায় সিরিজ নিশ্চিত করেই এই ম্যাচে খেলতে নেমেছিল স্বাগতিকরা।
এ ম্যাচের একাদশে সবমিলিয়ে চারটি বদল নিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল, ওপেনার স্টিভেন টেইলর, প্রথম ম্যাচ জয়ের নায়ক হারপ্রিম সিং ও দ্বিতীয় ম্যাচ জেতানো আলি হোসেন ছিলেন না। তবুও শুরুটা ভালো হয় যুক্তরাষ্ট্রের। প্রথম চার ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই ৩৫ রান তোলে তারা। পঞ্চম ওভারেও সাকিবকে ছক্কা হাঁকান দলটির ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীর।
এক বল পর সাকিবের বলে ক্যাচ ছেড়ে দেন গৌওসের ক্যাচ ছেড়ে দেন শান্ত। পঞ্চম ওভারের শেষ বলে গিয়ে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। সাকিবের বলেই লং অফে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন গৌওস। ১৫ বলে ৫টি চার ও ১ ছক্কায় ২৭ রান করেন তিনি।
ভেঙে যায় ৪৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। পরের ওভারে আরেক ওপেনার জাহাঙ্গীরকেও ফিরিয়ে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো তানজিম হাসানের হাতে ক্যাচ দেন জাহাঙ্গীর। ২ চার ও ১ ছক্কায় ২০ বলে ১৮ রান করেছিলেন তিনি।
দুই ওপেনারকে হারানোর পর অনেকটাই খেই হারিয়ে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংসও। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। তৃতীয় উইকেটিও পান মোস্তাফিজুর রহমান। তার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৯ বলে ৩ রান করা নিতিশ কুমার।
উইকেট পান আরেক পেসার তানজিম হাসান সাকিবও। ৭ বলে ২ রান করে তার বলে পুল করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
আগের ওভারে ক্যাচ ধরা রিশাদ হোসেন পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে নিজেই উইকেট পান। ২০ বল খেলে স্রেফ ৭ রান করা মিলিন্দ কুমারকে আউট করেন তিনি। মাঝে কোরি এন্ডারসন এসে ইনিংস গোছানোর চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু ১৮তম ওভারে এসে দুই উইকেট নেন মোস্তাফিজ। প্রথমে ১২ বলে ১৭ রান করা ভ্যান স্কালওয়েকে আউট করেন। এরপর ১৮ বলে ১৮ রান করা অ্যান্ডারসন হয়ে যান বোল্ড। শেষ ওভার করতে এসে জাতিন্দর সিংকে বোল্ড করে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন মোস্তাফিজ।
শেষ বলে গিয়ে তার বলে ক্যাচ দেন নিশারাগ প্যাটেলও। ৬ বলে ২ রান করেছিলেন তিনি। এই উইকেট নিয়ে একটি রেকর্ডেও নাম লেখান মোস্তাফিজ। প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে ছয় উইকেট পেলেন তিনি। সবমিলিয়ে ৪ ওভারে স্রেফ ৯ রান দিয়ে ৬ উইকেট পেলেন তিনি। এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৬ সালে ২২ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট ছিল তার সেরা বোলিং ফিগার।
রান তাড়ায় নেমে কোনো কষ্টই করতে হয়নি বাংলাদেশকে। লিটন দাস একাদশে থাকলেও এদিন ইনিংস উদ্বোধনে আসেন সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান তামিম। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে তারা তোলে নেন ৪৭ রান। ১১তম ওভারে গিয়ে নিজের হাফ সেঞ্চুরি দেখা পান তানজিদ হাসান।
উদ্বোধনী জুটিতেই শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। ৪২ বল খেলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৮ রান করেন তানজিদ হাসান। ৪ চার ও ২ ছক্কায় ২৮ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন সৌম্য সরকার। তাদের কল্যাণে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো ১০ উইকেট জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ