চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তান

২৩ অক্টোবর, ২০২৩ | ১০:৩৩ অপরাহ্ণ

ওয়ানডে বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তান। টপ অর্ডারদের অসাধারণ নৈপুণ্যে এক ওভার হাতে রেখে জয় তুলে নিয়েছে আফগানরা।

 

২৮৩ রানের লক্ষ্যে শুরু থেকেই আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ে ছিল জয়ের আত্মবিশ্বাস। প্রথম পাওয়ার প্লে-র ১০ ওভারে আফগানিস্তান তুলেছে ৬০ রান! ১০০ রান হয়ে গেছে ৯৩ বলে। দুই আফগান ওপেনারই ফিফটি পেয়েছেন। তুলনামূলক ধীরগতিতে ব্যাটিং করা ইব্রাহিম জাদরানই আগে ফিফটিতে পৌঁছেছেন (৫৪ বলে, ৮ চারে)। দলের রান ১০০ পেরোনোর কিছুক্ষণ পর ফিফটি হয়েছে রহমানউল্লাহ গুরবাজ – ৩৮ বলে, ৯ চারে।

 

শেষ পর্যন্ত ২২তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে শাহিন শাহ আফ্রিদি ভেঙেছেন আফগানিস্তানের ১৩০ রানের উদ্বোধনী জুটি। মিডল ও অফ স্টাম্পের মাঝামাঝি পড়ে বেরিয়ে যাওয়া শর্ট বলে পুলটা একটু আগেভাগেই করেছিলেন গুরবাজ, ক্যাচ চলে গেল থার্ডম্যানে উসামা মিরের হাতে। ৫৩ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৫ রান করে আউট হয়েছেন গুরবাজ।

 

কিন্তু এরপর রহমতকে সঙ্গে নিয়ে আবার ৬০ রানের জুটিতে পাকিস্তানকে ভুগিয়েছেন ইব্রাহিম। একটা পর্যায়ে তো মনে হচ্ছিল, ২৪ ম্যাচে গড়ানো ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরিটি পেয়েই যাবেন ইব্রাহিম, কিন্তু ৩৪তম ওভারে হাসান আলীর এক্সট্রা বাউন্সে ধোঁকা খেয়ে গেলেন। তাঁর ১১৩ বলে ১০ চারে সাজানো ইনিংস শেষ হলো ৮৭ রানে।

 

ওই উইকেটে আবার হয়তো আশা জেগেছিল পাকিস্তানের সমর্থকদের মনে, এই বুঝি অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস কিংবা শ্রীলঙ্কার মতো আফগানিস্তানের বিপক্ষেও শেষদিকে বল হাতে ঘুরে দাঁড়ালেন শাহিন আফ্রিদি, হারিস রউফরা। কিন্তু আজ আর তা হলো না!

 

গুরবাজ-ইব্রাহিম গেলেন, দাঁড়িয়ে গেলেন তিনে নামা রহমত শাহ। চারে নেমে তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদিও। দলকে ১৯০ রানে রেখে ইব্রাহিম বিদায় নিয়েছিলেন, রহমত-শহীদি মিলে ৩৭তম ওভারে আফগানিস্তানকে ২০০ পার করালেন, ৪৫তম ওভারের মাঝপথে ২৫০*-ও হয়ে গেল!

 

সে পথে ৪১তম ওভারে শাদাবের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পেয়ে গেলেন রহমতও (৫৮ বলে, ৪ চার ও ১ ছক্কায়)। তখনো পাকিস্তান আশায় ছিল, হারিসের তিন ওভার – এবং তার চেয়েও বড় কথা শাহিনের তিন ওভারে পাকিস্তান হয়তো ফিরে আসার পথ খুঁজে পাবে। তখনো যে বল-রানের সমীকরণে কোনোটিই বেশি এগিয়ে বা পিছিয়ে যায়নি। শাহিন-হারিসের ছয় ওভারে তাই রানতাড়ার চাপে আফগানিস্তান পথ হারাবে – এই আশাই হয়তো ছিল পাকিস্তানের সমর্থকদের।

 

কিন্তু শহীদি আর রহমত ধীরেসুস্থেই খেলে গেলেন। স্ট্রাইক রোটেট করেছেন বারেবারে। মারার বলে তো মেরেছেনই। ম্যাচজুড়ে ভোঁতা বোলিংয়ের পাশাপাশি বাউন্ডারিতে পাকিস্তানের ফিল্ডিংও ভুগিয়েছে দলটাকে, বেশ কয়েকটি চার হয়েছে শুধু বাউন্ডারিতে মিসফিল্ডিংয়ে। সে সুযোগে আফগানিস্তান রানের চাপটা কমিয়ে নিতে পেরেছে সহজেই।

 

বাবর আজমের অধিনায়কত্বও প্রশ্নের মুখে পড়ছে। শাহিনের দুটি, হারিসের দুটি এবং হাসানের একটি ওভার বাকি থাকা সত্ত্বেও তিনি ৪৬ ওভারে কেন উসামা মিরকে বোলিংয়ে এনেছেন, সেটির ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ওই এক ওভারেই উসামা রান দিয়েছেন ১১ – একটা বলেও সেভাবে ভোগাতে পারেননি ব্যাটসম্যানদের। তাতে এক ধাক্কায় ৪৭তম ওভারের আগে আফগানিস্তানের জন্য সমীকরণ নেমে আসে – ২৪ বলে ১৯ রান দরকার।

 

শাহিন আর হারিসের জন্য সমীকরণটা আরও কঠিন হল। কিন্তু তারা তা মেলাতে পারলে তো! শাহিনের করা ৪৭তম ওভারে রহমতের ব্যাটের কানায় লেগে চার হল, ওভারে এল ৮ রান। এর পরের ওভারটাতে আরেকবার নিজের অধিনায়কত্বকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়ে বাবর বলটা হারিসের হাতে না দিয়ে দিয়েছেন হাসান আলীর হাতে। তাঁর তৃতীয় বলটা হলো চতুর্থ স্টাম্পের লাইনে করা হাফভলি, সপাটে সেটিকে উড়িয়ে গ্যালারিতে পাঠিয়েছেন রহমত। ওই ওভারে ৭ রানে ম্যাচটার ফল নিয়ে হিসাব-নিকাশ তো সেখানেই শেষ করে দিয়েছে আফগানিস্তান। পরের ১২ বলে ৪ রানের সমীকরণ মেলাতে আর বেগ পেতে হওয়ার কোনো কারণ ছিল না।

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট