শব্দ হিসেবে ‘প্রতিশোধ’ ঠিক সমমাপিক হচ্ছে না। কোথায় লর্ডসে সেদিন বিশ্বকাপ ফাইনাল আর আজ তো মাত্র আরেকটি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। নিউজিল্যান্ড তবু বলতেই পারে, ক্ষতে একটু হলেও প্রলেপ দেওয়া গেল! তাও কী দুর্দান্তভাবে।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটা ইংলিশদের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড জিতল ৯ উইকেটে।
যেভাবে কিউইরা ম্যাচটা জিতল, তাতে ফেভারিট হিসেবে একটা ধাক্কা খেয়েই বিশ্বকাপ শুরু হলো ইংল্যান্ডের। প্রথমে বোলিংয়ে ইংলিশদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের বিপক্ষে নিয়মিত উইকেট তুলে নেন কিউই বোলাররা। তাতে ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ হয় ২৮২ রানে।
বোলিংয়ে অবশ্য ভালো শুরুই করেছিল ইংল্যান্ড।
১০ রানের মাথায় ওপেনার উইল ইয়াংয়ের উইকেট তুলে নেন স্যাম কারান। তখন কে জানত, ইংলিশ বোলারদের অসহায়ত্ব তো সবে শুরু হবে। ডেভন কনওয়ে আর রাচিন রবীন্দ্র মিলে ইংল্যান্ডের বোলারদের একপ্রকার নাচিয়ে ছেড়েছেন। এক দিনের জন্য ইংলিশ বোলারদের পাড়ার বোলারই বানিয়ে ফেলেছিলেন বললে খুব বেশি অত্যুক্তি হবে না।
কনওয়ে ও রাচিন দুজনেরই এটি প্রথম বিশ্বকাপ। প্রথমজন তাও টপ অর্ডারে নিয়মিত খেলছেন। কিন্তু রাচিনের ব্যাটিং নিয়ে কী বলা যায়? লোয়ার মিডল অর্ডার থেকে তাঁকে আজ টপ অর্ডারে তুলে আনা হয়। আস্থার প্রতিদান একেবারে হাতেনাতে দিয়েছেন রাচিন। জোড়া সেঞ্চুরিতে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ২৭৩।
যেকোনো উইকেটে বিশ্বকাপে এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের জুটি।
কনওয়ে ১৫২ রানের অপরাজিত। এই বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরিও তাঁর। সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন ৮৩ বলে। ইংলিশ বোলারদের কতটা বেধড়ক পিটিয়েছেন কনওয়ে, বাউন্ডারির সংখ্যার দিকে তাকালেই বোঝা যায়। ইনিংসে ১৯ চার আর ৩ ছক্কা। তাঁর চেয়ে দুটি ছক্কা বেশি মেরেছেন রাচিন। ৯৬ বলে ১১ চারে রাচিনের ইনিংসটি ১২৩ রানের। তাঁর ৮২ বলের সেঞ্চুরিটি কোনো নিউজিল্যান্ড ব্যাটারের বিশ্বকাপে দ্রুততম।
এর চেয়ে দারুণভাবে আর বিশ্বকাপ শুরু করার কথা ভাবতে পারত না নিউজিল্যান্ড। ঠিক তার উল্টো ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে। যেভাবে তারা ম্যাচটা হেরেছে, টুর্নামেন্ট শুরুর দিনই বাটলার-উডদের মনোজগতে বড়সড় ধাক্কা লাগার কথা। ৯ উইকেট আর ৮২ বল আগে ম্যাচ হারার ধাক্কা ইংলিশরা কিভাবে কাটিয়ে ওঠে, সেটাই এখন দেখার।
পূর্বকোণ/এএইচ