ভারতের বিপক্ষে সাকিব আল হাসান ও তাওহীদ হৃদয় আউট হওয়ার পর দুশোর আশেপাশে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা ঝেঁকে বসেছিল বাংলাদেশের ঘাড়ে। টাইগাররা সেই শঙ্কা এড়ায় শেষের দিকের তথা, লোয়ার অর্ডারের ব্যাটারদের ব্যাটে। নাসুম আহমেদ, শেখ মেহেদী ও তানজিম হাসান সাকিবরা ২৬৫ রানের লড়াকু পুঁজি এনে দেন লাল সবুজের প্রতিনিধিদের।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি খেলেন সাকিব আল হাসান। ৮৫ বলে ৮০ রান করেন তিনি, হৃদয় ৮১ বলে করেন ৫৪ রান। শেষের দিকে নাসুম আহমেদ ৪৪, শেখ মেহেদী ২৯ ও তানজিম সাকিব ১৪ রান করেন। তাতে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রান করে টাইগাররা।
প্রথম বলে চার মেরে খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। মোহাম্মদ শামির বলে স্কয়ার লেগে চার হাঁকান তানজিদ হাসান তামিম। ওই ওভারে বাংলাদেশ তুলে ৫ রান। শার্দুল ঠাকুরের পরের ওভারে তামিম একাই তুলেন ৮ রান। ভারতের বিপক্ষে বরাবরই জ্বলে উঠেন টাইগার ওপেনার লিটন কুমার দাস। সমর্থকরা আশা করেছিলেন এশিয়া কাপের সুপার ফোরে টিম ইন্ডিয়ার বিপক্ষে আবারও দারুণ কিছু করবেন তিনি। সমর্থকদের হতাশ করেছেন এ ব্যাটার। শূন্য রানে এদিন প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি।
নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসেই লিটন দাসকে তুলে নেন শামি। ভারতীয় পেসারের বলে সরাসরি বোল্ড আউট হন বাংলাদেশি ওপেনার। লিটন ফিরে যাওয়ার ওভারে আসে মাত্র ২ রান। অন্য প্রান্তে আবার বল হাতে তুলে নেন ঠাকুর। ওই ওভারের প্রথম বলে তিনি শিকারে পরিণত করেন তামিমকে। লিটনের মতো তিনিও সরাসরি বোল্ড হন। ১২ বলে তামিম করেন ১৩ রান।
২ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে এনামুল হক বিজয়ও উইকেট বিলিয়ে দেন। ঠাকুরের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে মিডউইকেটের দিকে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি, একটুর জন্য ধরা পড়েননি তিলক বার্মার হাতে। সেই শটটি থেকে অবশ্য বাংলাদেশ চার রান পায়। তৃতীয় বলটি ডট দেন বাংলাদেশ ব্যাটার। তার পরের বলে বাউন্সার খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুলের হাতে।
এরপর সাকিব ও মিরাজ মিলে চাপ সামাল দিতে থাকেন। এরমধ্যে মিরাজ দুবার জীবন পান। একবার তিলক বার্মা ক্যাচ তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন, আরেকবার ক্যাচ ছেড়ে দেন সূর্যকুমার যাদব। তবে রোহিতের কাছ থেকে আর বাঁচতে পারেননি তিনি। ভারত স্পিন দিয়ে অ্যাটাক শুরু করার সময়ই মিরাজকে নিয়ে ভয় শুরু হয়েছিল। ভয়কে সত্যি করে ১৩ রানে আউট হন তিনি। তার ক্যাচ নেন রোহিত শর্মা।
চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ার পর ক্রিজে নেমেছিলেন তাওহীদ হৃদয়। তার সঙ্গে সাকিব আল হাসান গড়ে তুলেন ১০১ রানের জুটি। সাকিব ছিলেন সেঞ্চুরির আশেপাশে। কিন্তু এরপরই শার্দুল ঠাকুরে বলে বিদায় নেন তিনি। ৮০ রান করে বিদায় নেন সাকিব। ৮৫ বলে তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। একটু পরই বিদায় নেন শামিম হোসেন।
নাসুমের সঙ্গে রানের চাকা ঘুরাতে থাকেন হৃদয়। তাদের সুন্দর সুন্দর শটে বড় আশা দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ৫৪ রান করার পর শামির বরে হৃদয় ক্যাচ তুলে দেন সীমানাদড়ির কাছে। ৮১ বলের ইনিংসে ৫টি চার ও ২টি ছয় হাঁকান তিনি। হৃদয় আউট হওয়ার পর দুশোর আশেপাশেই বাংলাদেশের থেমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। কিন্ত নাসুম আহমেদ ও শেখ মেহেদীর ব্যাটে সেই শঙ্কা এড়ায় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। শার্দুল-শামিদের পিটিয়ে নাসুম চলে যান অর্ধশতকের খুব কাছে। কিন্তু ৪৪ রানে তিনি আউট হন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার বলে। ৪৫ বলে ৬টি চারের পাশাপাশি একটি ছয় মারেন নাসুম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ২৬৫/৮ (তানজিম সাকিব ৯*, মিরাজ ২৪*, নাসুম ৪৪, হৃদয় ৫৪, লিটন দাস ০, তানজিদ ১৩, এনামুল ৪, মিরাজ ১৩, সাকিব ৮০, শামীম ১)
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ