ম্যাচ শেষ হতে তখনও প্রায় ৩০ মিনিট বাকি। স্বাগতিক ডালাস তখন এগিয়ে ৪-২ গোলের ব্যবধানে। তখন হয়তো ইন্টার মায়ামির হারের গল্প লেখা প্রায়ই শেষ। কিন্তু যে দলে মেসি সে দল কি আর হার মেনে নিতে পারে। মেসি লিখলেন আরও একটি প্রত্যাবর্তনের গল্প। বামপ্রান্তে তার ফ্রিকিক থেকে এসেছে আত্মঘাতী গোল আর ডানপ্রান্তের ফ্রিকিক থেকে নিজেই করেছেন অবিশ্বাস্য এক গোল। শেষ পর্যন্ত ৪-৪ সমতায় থাকা ম্যাচ গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। যেখানে ডালাসকে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে লিগ কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়েছে মেসির ইন্টার মায়ামি।
ডালাসের টয়োটা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি ছিল ইন্টার মায়ামির জার্সিতে মেসির প্রথম অ্যাওয়ে ম্যাচ। আগের ৩ ম্যাচে ৫ গোল করা আর্জেন্টাইন তারকা প্রতিপক্ষের মাঠে গোল পেয়েছেন শুরুতেই। ম্যাচের ৬ মিনিটেই বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরালো শটে বল জালে জড়ান মেসি। মায়ামিতে এটিই তার দ্রুততম গোল। তবে শুরুর এই লিড ধরে রাখতে পারেনি মায়ামি।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ৮ মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল দিয়ে ফেলে ডালাস। এর মধ্যে ৩৭ মিনিটে গোল করেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ফাকুন্দো কুইগনোন, ৪৫তম মিনিটে তানজানিয়ার বার্নার্ড কামুনগো।
প্রথমার্ধের শেষ দিকের এই ছন্দ দ্বিতীয়ার্ধেও ধরে রাখে ডালাস এফসি। এ সময়ে মায়ামি রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় দলটি। যে ধারায় ৬৩ মিনিটে ডালাস পেয়ে যায় তৃতীয় গোলও। ফ্রি-কিক থেকে আসা বলে পা ছুঁইয়ে বল জালে জড়ান ২১ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন উইঙ্গার আলান ভালেসকো।
ম্যাচের ওই মুহূর্তের ডালাস যে গতিতে ছুটছিল, তাতে মায়ামির হারই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। তবে বদলি নামা বেঞ্জামিন ক্রিমাশ্চি দ্রুতই মায়ামিকে লড়াইয়ে ফেরান। জর্দি আলবার গোলমুখে বাড়ানো বল জালে জড়িয়ে ব্যবধান ৩-২ করেন যুক্তরাষ্ট্রের ১৮ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। আলবাকে বলটি দিয়েছিলেন মেসি।
এর পাঁচ মিনিট পরই ম্যাচে আবার নাটকীয়তা। এবার নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন মায়ামির মিডফিল্ডার রবার্ট টেলর। তবে আত্মঘাতি থেকে পাওয়া গোলের সুবিধাটা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ডালাস। ৮০ মিনিটে মায়ামিকে আত্মঘাতি গোল ‘উপহার’ দেন ডালাসের মার্কো ফারফান। এই গোলে ‘অ্যাসিস্টে’র দাবি করতেই পারেন মেসি! তার নেওয়া মাপা ফ্রি কিকেই হেডে বল জালে জড়ান ফারফান। ম্যাচের স্কোরলাইন তখন ৪-৩।
এরপরই মেসি-ম্যাজিক! সমতা আনতে বাকি যে গোলটি দরকার ছিল, ৮৫ মিনিটে সেটিই এনে দেন মেসি। বক্সের সামান্য বাইরে পাওয়া ফ্রি-কিক কাছের গোল পোস্ট দিয়ে জালে জড়ান আর্জেন্টাইন তারকা। দেয়াল হয়ে দাড়ানো ডালাস খেলোয়াড়রা লাফিয়ে উঠলেও নাগাল পাননি, বল যায় তাদের মাথার ওপর দিয়ে। আবার বল আসছে বুঝে সঠিক দিকে ঝাঁপিয়ে নাগাল পাননি দলটির গোলরক্ষকও। দারুণ ফ্রি-কিকে মায়ামিকে ৪-৪ সমতায় নিয়ে আসেন মেসি।
টাইব্রেকারে প্রথম শটটি নেন মেসি। অনায়াস এক শটে গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে বল পাঠান জালে। মায়ামি গোল পায় পরের ৪ শটেও। ডালাস প্রথম ৪ শটের একটি থেকে গোল করতে না পারায় পঞ্চম শটটির আর দরকার হয়নি।
পূর্বকোণ/পিআর