আরেকটি ক্রিকেটীয় লড়াই উপভোগের প্রহর গুনছেন টাইগার ভক্তরা। নিশ্চিতভাবেই সারা দেশের ক্রিকেটপ্রেমী মাত্রই আজ নজর রাখবেন সাগরিকা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। তবে বাড়তি উন্মাদনা থাকবে চট্টগ্রামের ক্রিকেট ভক্তদের। তামিম ইকবাল শতভাগ ফিট নন জেনেও ‘খান’ সাহেবের ব্যাটিং দেখতে, টাইগারদের দাপুটে ক্রিকেট প্রত্যাশায় চট্টলার সকল শ্রেণির ক্রিকেট ভক্ত ভিড় জমাবেন গ্যালারিতে।
অতিথি আফগানদের বিরুদ্ধে ম্যাচটি শুরু হবে বেলা ২টায়। ৩ ম্যাচ সিরিজের দিবারাত্রির প্রথম ওয়ানডেটি সরাসরি সম্প্রচার করবে জিটিভি ও টি-স্পোর্টস। সর্বশেষ ঢাকা টেস্টে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে রেকর্ড জয়ের পর স্বাগতিক ক্রিকেট এই মুহূর্তে উড়ন্ত অবস্থাতেই আছে।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আফগানদের ওয়ানডে রেকর্ড সুখকর না হলেও অতিথি দলটির টেস্ট এবং ওয়ানডে স্কোয়াড ভিন্ন। তাছাড়া টেস্টে অমন বাজে হারের বদলা নিতে মুখিয়ে থাকবে আফগানরা। টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবালও সেটা জানেন।
গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে শতভাগ ফিট না হলেও আজ খেলবেন জানিয়ে তিনি যোগ করেন, আমাদের জিততে হলে লড়াই করতে হবে, অনেক ভালো খেলতে হবে। মাঠে গেলাম আর জিতে গেলাম এমন হবে না।
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান আজকের ম্যাচটির আগে মুখোমুখি হয়েছে ১১ বার। তাতে টাইগারদের জয় ৭টি। গেলো বছর এই চট্টগ্রামেই ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে লাল সবুজের দল। আফগানদের প্রশংসা করে অবশ্য এবারও তামিম প্রত্যাশা করছেন জয়ের। একাদশ নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তামিম। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেও সবার আগে জয় নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ে খুব বেশি পরিবর্তন না হলেও বোলিংয়ে ভিন্ন ভিন্ন পেস আক্রমণ থাকবে বলে তামিম জানিয়ে রাখলেন, ‘জিততে তো অবশ্যই চাইবো, এটাই সবার আগে। আমাদের পেস বোলিং ইউনিটের সবাই ভালো করছে। হয়তো সেখানে একটু পরিবর্তন দেখতে পারেন। হয়তো ভিন্ন ভিন্ন পেস কম্বিনেশন খেলাতে পারি। কালকে (আজ) কেমন খেলা হয় তার ওপর নির্ভর করছে। এটা বলতে পারি- এই ৩ ম্যাচে ভিন্ন ভিন্ন পেস বোলিং কম্বিনেশন হয়তো আপনারা দেখবেন।
ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজ মাঠে বাংলাদেশ অত্যন্ত শক্তিশালী দল। ২০১৫ সালের পর থেকে নিজ মাঠে বাংলাদেশ মাত্র দুটি ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে। দু’টিই হেরেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের কাছে। ২০১৬ সালের পর এ বছর ইংলিশদের কাছে পরাজিত হয়েছে টাইগাররা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলতি সিরিজটি আইসিসি সুপার লিগের অংশ না হলেও এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজটি অত্যন্ত কঠিন হলেও সিরিজটি ৩-০ ব্যবধানে জিততে পারলে ওয়ানডেতে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো র্যাংকিংয়ের পঞ্চম স্থানে উঠবে বাংলাদেশ। এছাড়া সফরকারী আফগানদের হোয়াইট ওয়াশ করতে পারলে প্রথমবারের মতো একশ রেটিং অর্জন করবে টাইগাররা।
আগের দিনই সংবাদ সম্মেলনে আফগানিস্তান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি বলেছিলেন- টেস্টে যা পারেননি ওয়ানডেতে তা করে দেখাতে চান। ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগের দিন নিজের মন্তব্যকে আরও জোরালোভাবে উপস্থাপন করছেন তিনি।
টাইগারদের পারফরমেন্সের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমরাও তো এখানে খেলতে ও জিততেই এসেছি! শুধু তাদেরই (বাংলাদেশ) সিরিজ নয় এটা। অবশ্যই তারা ভালো ক্রিকেট খেলছে। গত দুই বছরে আমরাও ভালো করেছি। রশিদ খান, মুজিবর রহমান, ফারুকী ও নবীদের নিয়ে নিশ্চিতভাবেই আফগানরা ঝাঁপিয়ে পড়ার চেষ্টা করবে।
তবে সাগরিকায় ম্যাচ শেষে উৎসব করবেন তামিমরা, এটাই চাওয়া টাইগার ভক্তদের।
পূর্বকোণ/এসি