চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুদের চোখ সমৃদ্ধির স্বপ্নে রঙিন’

মিতা পোদ্দার

১৭ মার্চ, ২০২৪ | ৫:২২ অপরাহ্ণ

১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন মন্ত্রিসভা ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনকে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ থেকে দিনটি সরকারিভাবে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪এক উৎসবমূখর পরিবেশে সারা দেশব্যাপী পালিত হবে। বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত আদর ও ভালোবাসতেন। শিশুদের সাথে গল্প করতে পছন্দ করতেন। কারণ তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন আজকের শিশুরা আগামী দিনের দেশ গড়ার কারিগর। আজকের তরুণপ্রজন্ম এই মহান নেতার আদর্শ থেকে দেশ গড়ার অনুপ্রেরণা লাভ করবে। যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে তাদের মাঝেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকবেন। জাতীয় শিশু দিবস প্রতিবছর পালিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে। অর্থাৎ ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবসের দিনে।
১৯২০ সালের এইদিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান ও মাতা সায়েরা খাতুনের চার কন্যা এবং দুই পুত্রের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানসিকতা, গরিব-দুঃখী মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও তাদের দুঃখ দূর করার প্রতিজ্ঞা তাঁকে রাজনীতিতে নিয়ে আসে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি আনন্দের দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। বাংলার হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু একজনই জন্মেছিলেন। যার জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হতো না। রোকনুজ্জামান দাদাভাই সারা জীবন শিশুদের নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি বলেন- শিশুদের সব অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে দেখা যেত। বঙ্গবন্ধুৃ বলতেন- ‘শিশু হও, শিশুর মতো হও। শিশুর মতো হাসতে শেখো। দুনিয়ার ভালোবাসা পাবে।’ আসলে বঙ্গবন্ধু ছিলেন শিশুর মতো সরল একজন, তাঁর হাসিও ছিল শিশুর মতো; আর তাই সারা পৃথিবীর ভালোবাসা তাঁর জন্য।
অন্যদিকে, শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, যুবক-বৃদ্ধ সবার কাছে তিনি ছিলেন মুজিব ভাই। এই সম্বোধন তিনি পছন্দ করতেন। এর ফলে বয়সের ব্যবধান ঘুচে যেত; তিনি হয়ে উঠতেন সবার একান্ত আপন, যেন আত্মার আত্মীয়। এসব গুণের জন্য তিনি হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু; এবং বঙ্গবন্ধু থেকে জাতিরজনক- বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি। ১৯৭২-এর মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রীয় সফরে সোভিয়েত ইউনিয়ন গিয়েছিলেন। সে সময়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের পরামর্শে দাদাভাই রোকনুজ্জামান খান মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা, পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারের অত্যাচারের দৃশ্য নিয়ে ৫ থেকে ১২ বছরের ১৫-১৬ জন শিশুর আঁকা ছবি সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভকে উপহার হিসেবে দেয়ার জন্য গণভবন ‘সুগন্ধা’য় যান এবং বঙ্গবন্ধু মুগ্ধ হয়ে বললেন, ‘আমার দেশের শিশুরা এমন নিখুঁত ছবি আঁকতে পারে, এসব না দেখলে বিশ্বাস করা য়ায না।’
তিনি আরো বলেছিলেন, ‘আজকের কর্মব্যস্ত সারাটা দিনের মধ্যে এই একটুখানি সময়ের জন্য আমি শান্তি পেলাম। শিশুদের সান্নিধ্য আমাকে সব অবসাদ থেকে মুক্তি দিয়েছে।’ শিশুরা চাইলেই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে পারত। সবার হাতে মিষ্টির প্যাকেট তুলে দেয়ার সময়ে বঙ্গবন্ধু একে একে সব শিশুর নাম শুনলেন। একটি শিশু তার নাম মুজিবুর রহমান বলায় বঙ্গবন্ধু আদর করে কোলে তুলে নিয়ে বললেন- ‘পেয়েছি, আমার মিতাকে পেয়েছি।’ শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা। বাংলা ও বাঙালি যতোদিন থাকবে, বঙ্গবন্ধু একইভাবে প্রজ্বলিত হবেন প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে, মুক্তিকামী ও শান্তিকামীর হৃদয়ে।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট