চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

ক্রনিক স্ট্রেসে জীবন নিঃশেষ! যেভাবে মিলবে স্বস্তি

মুহাম্মাদ সজল

২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ৭:২৪ অপরাহ্ণ

হার্ট ডিজিজের সবচেয়ে বড় পাঁচটা কারণের একটা হচ্ছে ক্রনিক স্ট্রেস। এখন কেন আমরা এত স্ট্রেসে থাকি এটা নিয়ে বিস্তারিত লেখা অনেক বেশি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সংক্ষেপে বলতে গেলে বলতে হয়, ৫টি কারণ আছে যেজন্য আমরা এত বেশি স্ট্রেসড ফিল করি।

 

১) বাতাস, পানি ও মাটির গুণাগুণ বদলে যাওয়ায় বাতাস আগের মত বিশুদ্ধ অক্সিজেন দেয় না, পানি আগের মত ট্রেস মিনারেল দেয় না এবং মাটি আগের মত উপকারী ব্যাকটেরিয়া-নিউট্রিয়েন্ট দেয় না। কিন্তু এই তিনটি জায়গা থেকেই আমরা পেতে থাকি হেভি মেটাল।

 

২) অতি উচ্চমাত্রায় ধারাবাহিকভাবে পাওয়া তথ্য ও ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সি। এর মূল উৎস ইন্টারনেট, বিশেষভাবে মোবাইল। আমাদের মস্তিষ্ক এখন একচেটিয়া ওভারওয়ার্ক করে, মস্তিষ্কের তাপমাত্রা সাধারণত স্বাভাবিক থাকে না।                                               

৩) অতি বেশি কাজ করা। মানুষ তার ইতিহাসের ৯৫ শতাংশ সময় গড়ে দিনে ৫ ঘণ্টার কম কাজ করেছে। এখন আমরা ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করি প্রতিদিন। আমাদের শরীরের সমস্ত কোষ এই ক্লান্তিকে সেন্স করতে থাকে।

 

৪) সার্কাডিয়ান রিদম ডিজরাপশন- আমরা এখন রাতে ঠিকভাবে ঘুমাই না, ‘লাইট পলিউশন-নয়েজ পলিউশান’ আমাদের এড্রেনালিন হরমোনকে হাই রাখে রাতের বেলা। দিনের বেলা আমরা রোদে থাকি না। সবমিলিয়ে আদর্শ অবস্থার বিপরীতে থাকি আমরা, যা আসলে শরীরকে এক ধরনের অঘোষিত ইমারজেন্সিতে রাখে।

 

৫) মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ডেফিসিয়েন্সি: এই সমস্যাগুলোকে সামাল দেয়ার জন্য আমাদের প্রয়োজন হয় প্রচুর পরিমাণে বাড়তি এন্টিঅক্সিডেন্ট। প্রয়োজন হয় ফ্রি র‍্যাডিক্যাল স্ক্যাভেঞ্জার। এগুলো আমাদের খাবারে যথেষ্ট পরিমাণে আসলে খুব কমই থাকে। সব মিলিয়ে, আমরা থাকি সার্বক্ষণিক স্ট্রেসে।

 

এই ক্রনিক স্ট্রেস থেকে এলেভেটেড এড্রেনালিন, কর্টিসোল, ইনসুলিন, গ্লুকোজ আমাদের শরীরে যে সার্বক্ষণিক ইমার্জেন্সি তৈরি করে, তা আমাদের হার্ট মাসলের গায়ে তৈরি করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস, হাইপোক্সিয়া এবং ল্যাকটেট ওভারলোড। অর্থাৎ, হার্ট মাসলগুলো সবসময়ই অক্সিজেনের অভাবে ভুগে তিলে তিলে নিঃশেষ হতে থাকে।

 

আমরা অনেকেই আছি, জীবনে বড় হওয়ার জন্য এত বেশি স্ট্রেস নেই যা নিজের শরীর সহ্য করতে পারে না। অনেকেই আছি, পরিবার-স্বজন-বন্ধুবান্ধবের কথায়, অফিসে বস/কলিগদের কথায় এমন চাপ নেই যা আসলে আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে দাঁড়ায়।

 

স্ট্রেস ছাড়া কোন মানুষ নেই জগতে। স্ট্রেস থাকবেই। কিন্তু স্ট্রেসকে ম্যানেজ করার জন্য আমাদের বাড়াতে হবে সক্ষমতা। সেজন্য আমি ক্রনিক স্ট্রেসে ভুগছেন এমন সবাইকে পরামর্শ দেবো ৩টি কাজ নিয়মিত করতে, যাতে হার্ট ডিজিজের ভয়াবহতা কমানো যায়।

 

১) দিনে এক হাজার মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাবেন। সিভিট বা চিনিযুক্ত ভিটামিন সি না খেয়ে সোডিয়াম/ম্যাগনেসিয়াম এসকরবেট ফর্মে খেতে চেষ্টা করবেন।

২) সচেতনভাবে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের চর্চা করবেন, গভীর দম নেবেন ও ফেলবেন

৩) সপ্তাহে অন্তত ২/৩ দিন ১০ কিলোমিটার হাটার চেষ্টা করবেন।

দেখবেন, জীবনটা বদলে যাচ্ছে একটু একটু করে।

 

লেখক: ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট