ফাইল ছবি
ভারতে বসে হাসিনার অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টায় আমাদের আপত্তি আছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে বসে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন উল্লেখ করে এতে বাংলাদেশ সরকারের আপত্তির বিষয় তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেছেন, আদালতের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সাজা পেয়েছেন। আমাদের পাশের দেশে বসে এখানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, এতে আমরা আপত্তি করবো কিংবা তাকে ফেরত পাঠাতে সহায়তা চাইব, এটা খুব অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু তারা (ভারত) সেদিকে যায়নি।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনারকে তলব প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা তাদের (ভারতের) হাইকমিশনারকে ডেকেছি। সেখানে আমরা যা বলেছি, সবকিছু তারা গ্রহণ করেনি, তাদের কিছু দ্বিমত আছে। একইভাবে আমাদের হাইকমিশনারকেও তারা ডেকেছে। এমনটা সাধারণত ঘটে।
কূটনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশ নতুন একটি ধাপে পৌঁছে গেছে কিনা- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এটা বলা কঠিন—নতুন একটি ধাপ শুরু হয়েছে কিনা। বাস্তবতাকে মেনে নেওয়ায়ই ভালো যে সরকারের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত টানাপোড়েন আছে।
‘ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েন ছিল—এটা মেনে নিয়েই আমরা সবসময় বলে এসেছি—আমরা একটি গুড ওয়ার্কিং রিলেশন চাই। আমরা চাইলেই সেটা হবে, এমন কোনো কথা নেই।’
দুই পক্ষ থেকেই সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, আমরা দুপক্ষ মিলেই হয়তো অতটা এগোতে পারিনি—টানাপোড়েনটা রয়েই গেছে। ইদানীং কিছু কিছু বিষয়ে আমাদের আপত্তি আছে, তাদেরও নিজস্ব অবস্থান আছে।’
‘ভারতে বসে শেখ হাসিনা আগে বক্তব্য দিতেন সামাজিক মাধ্যমে। সাম্প্রতিক দেখলাম, মূলধারার সংবাদমাধ্যমেও তার বক্তব্য এসেছে। সেই বক্তব্যের মধ্যে প্রচুর উসকানি রয়েছে। যা আমরা দেখেছি।’
ভারতীয় ভিসা সেন্টার বন্ধ নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ যেহেতু একটি কর্মসূচি ছিল, সেহেতু তারা তাদের ভিসা সেন্টার বন্ধ রাখতে পারে। কারণ তাদের তো নিরাপত্তার বিষয়টি আছে। তারা যাতে নিরাপত্তার অভাবে ভীত না হয়, আমরা সেই চেষ্টা করেছি, তাতে আমরা সফল হয়েছি। ভিসার বিষয়ে যে কোনো দেশ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’
ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন ছোট করা হবে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যখন মনে করবো আমাদের কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত কাজ নেই, তখন আমরা সেই চেষ্টা করবো। কিন্তু এই মুহূর্তে মনে করি না, সেই প্রয়োজন আছে।’
তিনি বলেন, ‘ভারত যদি শেখ হাসিনাকে থামাতে না চায়, তাহলে আমরা সেটা থামাতে পারবো না। আমরা চাই, শেখ হাসিনাকে ভারত থামাক। যাতে তার উসকানিমূলক বক্তব্য আমাদের নির্বাচনী পরিবেশকে উত্তপ্ত করতে না পারে। তারা এটা করলে সেটাকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে নেব।’
পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ