
বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সিনিয়র অফিসিয়ালস সংলাপের (এসওটি) ষষ্ঠ রাউন্ড ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয়-পূর্ব ও পশ্চিম) ড. মো. নজরুল ইসলাম এবং অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য বিভাগের (ডিএফএটি) দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের প্রথম সহকারী সচিব সারাহ স্টোরি নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়।
দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে ষষ্ঠ এসওটি একটি উষ্ণ এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, উন্নয়নমূলক অংশীদারিত্ব, অভিবাসন ও যাতায়াত, সামুদ্রিক সহযোগিতা, বহুপাক্ষিক যোগাযোগ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগ-সহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিস্তৃত দিক নিয়ে গঠনমূলক ও দূরদর্শী মতবিনিময় হয়।
উভয় পক্ষ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, আইওআরএ সম্পৃক্ততা এবং রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়ে মতবিনিময় করেছে। দুই প্রতিনিধি দল নবায়নযোগ্য জ্বালানি, দক্ষতা অংশীদারত্ব ও প্রযুক্তি বিনিময়, ব্লু ইকোনমি, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সাইবার সিকিউরিটি এবং অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং উদ্যোগের মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন পথ চিহ্নিত করেছে।
ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি সারাহ স্টোরি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং এর সংস্কার উদ্যোগের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। আসন্ন সাধারণ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া পোস্টাল ভোটিংয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পূর্ণ সমর্থনসহ বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রত্যাশা করছে।
তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরেন যেমন- জনগণের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ সম্প্রসারণ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, উন্নয়ন অংশীদারত্ব বাস্তবায়ন, রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে সহায়তা, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা, ইন্দো-প্যাসিফিক সহযোগিতা। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে তার তুলা ও উল শিল্পের জন্য দ্বিতীয় উৎপাদন স্থান হিসাবে অগ্রাধিকার দেওয়ার আগ্রহের কথা জানানো হয়।
নজরুল ইসলাম অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য ওয়ার্ক ও হলিডে ভিসা পুনরায় চালু, অস্ট্রেলিয়ার খনি খাতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ, ঢাকায় ইউনিভার্সিটি অব ক্যানবেরার ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা এবং অস্ট্রেলিয়ান টিএএফই ও বাংলাদেশি টিভিইটি’র মধ্যে সহযোগিতার প্রস্তাব করেন।
নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান অংশীদারত্বকে এগিয়ে নিতে উচ্চ পর্যায়ের সফর বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক ও কনস্যুলার কর্মীদের নির্ভরশীলদের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আলোচনা শেষ হয়।
সফররত অস্ট্রেলিয়ান প্রতিনিধি দলটি মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় পৌঁছায় এবং বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির (টিআইএফএ) অধীনে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে অংশ নেবে। আগামী বছর ক্যানবেরায় সপ্তম এসওটি অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পূর্বকোণ/পারভেজ