চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

হিমালয়ে জলবায়ু সহনশীলতার জন্য পানি ন্যায্যতা ও সীমান্ত সহযোগিতার আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক

৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ১২:৩১ অপরাহ্ণ

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান হিমালয় অঞ্চলে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা জোরদার ও জলবায়ু সহনশীলতা গড়তে পানি ন্যায্যতা, নদীর অধিকার ও আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) নেপালের কাঠমান্ডুতে ‘হিন্দুকুশ হিমালয়ায় পানি ও জলবায়ু সহনশীলতা’ শীর্ষক সাব-রিজিওনাল কর্মশালায় ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, ‘পানি যুগ যুগ ধরে দেশগুলোর সম্পর্ক যুক্ত করেছে, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় এটি সবচেয়ে কম ব্যবস্থাপিত যৌথ সম্পদ হিসেবে রয়ে গেছে।’

তিনি জানান, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে জাতিসংঘের পানি কনভেনশনে যুক্ত হয়েছে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, তথ্য বিনিময় ও নদীর ন্যায্য বণ্টন বিষয়ে সক্রিয় সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এই কনভেনশন আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে পারে এবং জলবায়ু পরিবর্তনে বাড়তে থাকা পানি সংকট মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে।’

উজান–ভাটির পারস্পরিক নির্ভরশীলতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘নেপাল, ভুটান বা ভারতের নদীতে যা ঘটে তার সরাসরি প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে। আমাদের ৯০ শতাংশ নদী উজান থেকে নেমে আসে। বন্যা, খরা, পলি জমা, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড় বা নদীভাঙন—এসব এখন আঞ্চলিক সমস্যা।’

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘নীতিমালা, আইন ও প্রতিষ্ঠান থাকলেও বাস্তবায়নের ঘাটতি নদী ব্যবস্থাপনায় বড় বাধা। কয়েক দশক আগে গড়ে ওঠা বাঁধ ও অন্যান্য অবকাঠামোর কারণে নদী ব্যবস্থায় অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে বিবেচনা না করে নির্মিত অনেক প্রকল্প পরিবেশগত ক্ষতি ডেকে আনছে।’

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘নদীর অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে। নদী শুধু সেচ, নৌপরিবহন বা বিদ্যুৎ উৎপাদনের উৎস নয়—এগুলো জীবন ও প্রাণবৈচিত্র্যের ধারক। বাংলাদেশ ও ভারতের আদালতের কয়েকটি রায়ে নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এ স্বীকৃতির বাস্তবায়নে সরকারি সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি আঞ্চলিক পানিবিদ্যুৎ বাণিজ্যকে নতুন সহযোগিতার সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ–নেপালের সাম্প্রতিক পানিবিদ্যুৎ চুক্তির মাধ্যমে আস্থা ও পরিবেশগত দায়িত্বশীলতার ভিত্তিতে সহযোগিতা বাড়ানো সম্ভব। উজানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে।’

অনুষ্ঠানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. কল্যাণ রুদ্র, ড. দেবোলিনা কুণ্ডু, অরবিন্দ কুমার; নেপালের সঞ্জীব বরাল; ভুটানের পেমা থিনলে; বাংলাদেশের ড. মো. আবদুল হোসেন এবং ইউথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান বক্তব্য দেন।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট