
বিডিআর হত্যাকাণ্ড যদি মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় পড়ে তবে এর বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে এসেছে। সেগুলো তাঁরা যাচাই-বাছাই করে দেখবেন।
আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গতকাল রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ২০০৯ সালে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে এসেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনও পড়ে দেখবেন। যদি মনে হয়, বিডিআর হত্যাকাণ্ড মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পড়ে কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার করার উপযুক্ত, তাহলে এখানে (ট্রাইব্যুনালে) হবে। অন্যথায় দেশের প্রচলিত অন্যান্য আইনেও বিচার হতে পারে।
তাজুল ইসলাম বলেন, কারা অপরাধী ছিল, কারা পরিকল্পনাকারী ছিল, মদদদাতা ছিল, সুবিধাভোগী ছিল, কারা কারা এখানে সম্পৃক্ত ছিল—এসব জিনিস যেহেতু উদ্ঘাটন করা গেছে, আশা করা যায়, এর মাধ্যমে তাদের বিচারও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে ওই প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ পাওয়া গেছে। এই সারসংক্ষেপ থেকে বোঝা যাচ্ছে, একটি অসাধারণ কাজ হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে রাজধানীর বুকে এতগুলো সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। সেটার সঠিক তদন্ত এত দিন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। সেই জিনিসটা এই সরকার করেছে। জাতির সামনে উন্মোচন করেছে, পেছনে কারা মাস্টারমাইন্ড ছিল, কারা হত্যাকারী ছিল, কারা এটার বেনিফিশিয়ারি।
এর মাধ্যমে যাঁরা বিচারের আওতার বাইরে রয়ে গেছেন, তাঁদের বিচারের সুযোগ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, অতীতে বিচার করে যাঁদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে, সেখানে কেউ ইনজাস্টিসের (অন্যায়) শিকার হয়ে থাকলে, তা প্রতিবেদন থেকে পাওয়া যাবে। এটাকে বাংলাদেশের ইতিহাসে অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পূর্বকোণ/পারভেজ