
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশমালা ‘প্রতারণামূলক’ অভিযোগ করে অবিলম্বে তা সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় ঐক্যমত্য কমিশন প্রনীত সুপারিশমালা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি ছিল সনদে, তা বাদ দেওয়া হয়েছে এবং তাতে তারা বিস্মিত।
ফখরুল বলেন, “আমাদের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তারা তাদের রিকমন্ডেশন দিয়ে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার কাছে…প্রধান উপদেষ্টার সইও আছে সেখানে…তিনিও এই কমিশনের চেয়ারম্যান। এখন অবাক বিস্ময়ে আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি যে, আমরা খুব একেবারে অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে যে বিষয়গুলোর সঙ্গে আমরা একমত ছিলাম না…আমরা সেখানে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলাম। সেই নোট অব ডিসেন্টগুলো লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল তাদের (জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের)।
“কিন্তু অবাক বিষয় আমরা লক্ষ্য করলাম যে, কালকে (বুধবার) যখন তারা এটা প্রকাশ করলেন সেই নোট ডিসেন্টগুলো নেই…পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে…ইগনোর করা হয়েছে। এটা তো ঐকমত্য হতে পারে না। তাহলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনটা করা হয়েছিল কেন? এই ঐকমত্য কমিশন আমি বলব জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটা প্রতারণা এবং আমি বলব যে এগুলো অবিলম্বে সংশোধন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।”
প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আপনি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আপনি এখানে সত্যিকার অর্থেই যেটুকু সংস্কার দরকার, সেই সংস্কারগুলো করে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পার্লামেন্ট আসবে এবং সেই পার্লামেন্ট এই দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে।’
‘আজকে যদি এর থেকে কোনো ব্যত্যয় ঘটে, এর বাইরে যদি যান, তার দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনাকেই বহন করতে হবে। এ কথাটা আমি খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই। আমি আশা করব, তাদের এই উপলব্ধি আসবে।’
মির্জা ফখরুল অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘অতি দ্রুত সংস্কার কমিশনে সব দলের মধ্যে যেগুলো আমরা একমত হয়েছি এবং যেগুলোতে দ্বিমত পোষণ করেছি, সবকিছুকে নিয়ে আপনি অবিলম্বে একটি নির্বাচন দেবেন।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘এ কারণেই আমরা ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরপরই নির্বাচনের কথা বলেছিলাম। তখন অনেকে বলেছিলেন, আমরা ক্ষমতা চাই, তাই অতি দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছি। কিন্তু আজকে প্রমাণিত হচ্ছে যে এই নির্বাচন যত দেরি হচ্ছে, তত বেশি সেই ফ্যাসিবাদের পক্ষের শক্তিগুলো শক্তিশালী হচ্ছে।’
পূর্বকোণ/পিআর