মাহে রমজান প্রশিক্ষণের মাস। আত্মশুদ্ধি ও আত্মগঠনের সময়কাল। এ মাসে মুমিন-মুসলমানরা নৈতিক ও ঈমানি চরিত্র অর্জন করত বাকী এগারো মাসে তদানুযায়ী আমলপূর্বক উন্নত জীবনযাপন করেন।
রমজানে ঈমানদারগণ দিবাবেলায় সিয়াম ও রাতের বেলায় ক্বিয়ামে নিরলস ও বলিষ্ট চেতনার শিক্ষা পায়। ক্ষুধা-তৃষ্ণায় দরিদ্রের কষ্ট বুঝার সুযোগ লাভ করে। ইফতার ও তারাবিহ হতে মুসলিম ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের চিত্র ফুটে ওঠে।
রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রোজা একটি ঢালের ন্যায়। যুদ্ধের ময়দানে সৈনিক যেমন ঢাল দিয়ে শত্রুর আঘাত সমানে প্রতিহত করে, অনুরূপভাবে জীবন যুদ্ধে শয়তানের চতুর্মুখী বিভিন্ন আক্রমণ প্রতিহত করতে মুমিনের জন্য রোজার কোন বিকল্প নেই।
মহানবী সা. আরো বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের অনুভূতি এবং আখিরাতে সওয়াবের আশায় সিয়াম পালন করবে তার পূর্বের সব গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে (সহীহ বুখারি ও মুসলিম)।
অতএব রোজাদার মাসব্যাপী কঠোর কৃচ্ছতা সাধনের মাধ্যমে যে গুণাবলী অর্জন করবে তা বাকী মাসগুলোতে মেনে চলবে। অন্যথা রোজার কোন স্বার্থকতা নেই। মানুষের কুপ্রবৃত্তি দমন করা রোজার অন্যতম উদ্দেশ্য। কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য- এ ষড়রিপুকে বশীভূত করে রোজা।
যে আয়াতে ক্বারীমা দ্বারা রোজা ফরজ করা হয়েছে সে আয়াতে ক্বারীমায় রোজার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘লা-আল্লাকুম তাত্তাকুন’- রোজা এজন্য ফরজ করা হয়েছে যে ‘যেন তোমরা তাকওয়ার চরিত্র অর্জন করতে পারো’। তাকওয়া অর্থ-আত্মরক্ষা করা, বিরত থাকা। ইসলামের পরিভাষায়, শরীয়াতের আদেশগুলো পালন করা এবং নিষেধসমূহ থেকে বিরত থাকার নামই তাকওয়া। আর এ তাকওয়া অর্জন করে বাকী ১১ মাস চলতে না পারলে সে রোজার কোন মূল্যায়ন থাকবে না।
আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে রোজার মূল উদ্দেশ্য তাকওয়াভিত্তিক জীবন গঠনের তৌফিক দান করুন, আমীন।
পূর্বকোণ/ইব