সংস্কারের নামে দিনের পর দিন অনির্বাচিত সরকারকে দেশ চালাতে দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা’ শীর্ষক সভার আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) একাংশ।
কেউ যদি বলে আমরা সংস্কারের দাবি নিয়ে এসেছি, সেটা ভুল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার কোনো নতুন ধারণা নয়। আর সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতি মুহূর্তে সংস্কার হচ্ছে, সেই ধারা চলতে থাকবে। সেই জন্য নির্বাচন বন্ধ হয়ে থাকতে পারে না। সেই পর্যন্ত আমরা একটি অনির্বাচিত সরকারের হাতে দিনের পর দিন দেশ চালাতে দিতে পারি না। সেই কারণে আমরা যখন বলি, নির্বাচন তাড়াতাড়ি চায়, তখন আমাদের সম্পর্কে একটা ভুল ব্যাখা দেওয়া হয় যে, বিএনপি তাড়াতাড়ি নির্বাচন চাচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। ক্ষমতায় তো আমরা আগেও ছিলাম। আল্লাহ চাইলে আমরা আবারও ক্ষমতায় যাবো।
বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেনি বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমি বলতে চাই এই সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল করেছিল আওয়ামী লীগ। সেখান থেকে তিনি বের করে বহুদলীয় গণতন্ত্র এনেছিল।
সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাদের (সদস্যদের) জনগণের কাছে যাওয়ার আহ্বান রাখেন মির্জা ফখরুল।
আজকে বাংলাদেশে অস্থিরতা ও স্থিতিশীলতার সমস্যা আছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটা নির্বাচিত সরকার এলে এই সমস্যাগুলো অনেক কমে যাবে। কারণ নির্বাচিত সরকারের শক্তি অন্য, কারণ তার পেছনে জনগণের শক্তি থাকে। সে জন্য আমরা বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। সংস্কার সবচেয়ে বেশি বিএনপি চায়। একইসঙ্গে অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা বেশিদিন থাকা উচিত নয়।
সরকারের উপদেষ্টারা দ্রব্যমূল্য কমানোসহ জনদুর্ভোগ কমানোর চেষ্টা করছেন না বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে মন্তব্য করছেন। এটা উচিত নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলছেন না। তাদের সহযোগিতা করছেন না। রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের প্রতিপক্ষ নয়।’
সংস্কারের পাশাপাশি সুশাসন ও জনদুর্ভোগ কমানোর উদ্যোগ না নিলে লক্ষ্য অর্জন হবে না বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি যোগ করেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে আক্রমণ ও তীর্যকভাবে কথা বলে সংকট সমাধান হবে না।’
পূর্বকোণ/পিআর