দীর্ঘ ১১ বছর পর দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
এ সময় দেশে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন, হিটলার চলে যাওয়ার পর জার্মানি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। কিন্তু জার্মানি এখন এক হয়ে গেছে। তিনটি বিষয়ে জাতি যদি একমত হতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী ও কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আর সেই তিনটি বিষয় হলো- স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘ ১১ বছর পর দেশে এলাম। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। আমি এ দেশকে ভালোবাসি। এই শহর আমার নিজের শহর। এখানকার আইনাঙ্গনেই আমার বিচরণ ছিল। আজকে এত বছর পর দেশে আসতে পেরে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শুকরিয়া আদায় করছি।
তিনি আরও বলেন, বিমান যখন ঢাকার এয়ারপোর্টে এসে অবতরণ করছিল, তখন আমি স্মরণ করছিলাম সেই সমস্ত তরুণ যুবকদের কথা, যারা সর্বোচ্চ সেক্রিফাইস করে আজ দেশ ও জাতির জন্য একটি মুক্ত পরিবেশ করে দিয়েছে।
ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, আমাদের যুবকরা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে আমাদের জন্য স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আজকের এই দিনে আমি তাদের অবদানকে শ্রদ্ধা ভরে স্বীকার করছি। কিন্তু আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি। প্রতিটি বিপ্লবের পরেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। ফ্রেঞ্চ বিপ্লবের পর হয়েছে, আমেরিকান রেভুলেশনের পরও হয়েছে।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের শাসনামলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হলে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রধান আইনজীবী ছিলেন। ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়। একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ইংল্যান্ডে চলে যান।
একপর্যায়ে তিনি জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেন। পরে তিনি এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হন। এরপর গত সেপ্টেম্বরে এবি পার্টি থেকেও পদত্যাগ করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। জানা গেছে, তিনি সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়মিত হবেন। তার দুই ছেলে সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় আছেন।
পূর্বকোণ/মাহমুদ