২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে মোট ঘুষের ন্যূনতম প্রাক্কলিত পরিমাণ ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে ‘সেবাখাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০২৩ প্রতিবেদন’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মধ্যে ২০২৩ সালে ঘুষের হার সবচেয়ে বেশি ভূমি, বিচারিক সেবা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, পাসপোর্ট, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও বিআরটিএতে। ওই বছর প্রাক্কলিত ঘুষের পরিমাণ ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা।
আট বিভাগের ১৫ হাজার ৫১৫টি পরিবারের তথ্য এই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৩ মে থেকে ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট পর্যন্ত জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। আর ১৫ বছরের হিসাব টিআইবি’র ১০টি খানা জরিপের তথ্য-উপাত্ত থেকে করা হয়েছে।
টিআইবির প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ সালে জাতীয়ভাবে প্রাক্কলিত ঘুষের পরিমাণ ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা। যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের ১.৪৩ শতাংশ ও জিডিপির ০.২২ শতাংশ। এই পরিমাণ অর্থ দেশের মানুষ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সেবা পেতে ঘুষ দিয়েছে। তালিকায় মোট ১৪টি খাতের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
যার মধ্যে রয়েছে ভূমিতে ২ হাজার ৫১৩ কোটি, বিচারিক সেবায় ২ হাজার ৫১৩ কোটি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায় ২ হাজার ৩৫৭ কোটি ৫০ লাখ, পাসপোর্টে ১ হাজার ৩৫০ কোটি, স্থানীয় সরকারে ৮৪০ কোটি ৯০ লাখ, বিদ্যুতে ৩০৯ কোটি ৬০ লাখ, স্বাস্থ্যখাতে ২৩৫ কোটি ১০ লাখ ও শিক্ষায় ২১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, সেবা পেতে খানা বা পরিবার প্রতি ৫ হাজার ৬৮০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। গড় ঘুষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বিচারিক সেবা, ভূমিসেবা ও ব্যাংকিং খাতে। সেবা পেতে ৭০.৯ শতাংশ পরিবার দুর্নীতি ও ৫০.৮ শতাংশ পরিবার ঘুষের শিকার হয়েছে।
এ বিষয়ে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিচারিক সেবা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায় দুর্নীতি ও ঘুষের উচ্চহার অব্যাহত। যা সাধারণ জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বড় বাধা। অন্যদিকে, ভূমিসেবা, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং বিআরটিএ’র মতো সেবায় উচ্চ দুর্নীতি ও ঘুষ বিদ্যমান, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ সেবাপ্রাপ্তির অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করছে।
পূর্বকোণ/মাহমুদ