দেশে ফাইভ-জি সেবা চালু করতে মোবাইল অপারেটররা নিজস্ব ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চায়। তবে ফাইবার সেবাদাতারা এর বিপক্ষে। মোবাইল অপারেটরদের যুক্তি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সিংহভাগ ফাইবার ঝুলন্ত, যা অনেক বেশি মাত্রায় দুর্ঘটনাপ্রবণ এবং ব্যয়বহুল। যদিও এসব যুক্তি মানতে নারাজ বেসরকারি ফাইবার প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা বলছে, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ব্যবসা ও বিনিয়োগ। তবে সবকিছু বিশ্লেষণ করে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এমনটি বলছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
মোবাইলে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মতো কন্টেন্ট দেখতে ৩ থেকে ৫ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন হয়। গ্রাহকের অবস্থান ফাইবারযুক্ত টাওয়ারে হলে সহজেই তা পেয়ে যান। তবে ফাইবার না থাকলে মাইক্রোওয়েভ দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যান্ডউইথ সব সময় মেলে না। এতে খারাপ হয় সেবার মান। নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিতে দেশজুড়ে সরকারি-বেসরকারি ছয় প্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ৭২ হাজার কিলোমিটার ফাইবার নেটওয়ার্ক রয়েছে। অথচ ৪৫ হাজার মোবাইল টাওয়ারের মধ্যে ফাইবারে যুক্ত মাত্র ১৫ হাজার টাওয়ার অর্থাৎ প্রায় ২৭ শতাংশ।বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, ‘ফাইবার দিয়ে সার্ভিসটা নিতে পারলে এবং এটার শতভাগ আন্ডারগ্রাউন্ড থাকলে আমরা নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক পেতাম। তখন আর এই কথা বলার সুযোগ থাকতো না যে, ফাইবার কেটে যাওয়ায় নেটওয়ার্ক বন্ধ।’
ফাইবার ব্যবহারে মোবাইল অপারেটরদের অনীহা কেন? তথ্য বলছে, সামিট ও ফাইবার অ্যাট হোমের ১ লাখ ২২ হাজার কিলোমিটার নেটওয়ার্কের মধ্যে ৮০ হাজার কিলোমিটারই ঝুলন্ত ফাইবার। যেকোনো মুহূর্তে কাটা পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। ডিডব্লিউডিএম মেশিন আমদানির অনুমতি না থাকায় সরকারি ফাইবারও কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না মোবাইল অপারেটররা। সরকারি ফাইবার প্রতিমিটারে ভাড়া ৫ থেকে ৭ টাকা। অথচ বেসরকারিতে ক্যাপাসিটিভিত্তিক ব্যান্ডউইথ ট্রান্সমিশন খরচ ১৭ থেকে ২০ টাকা। আছে ডার্ক ফাইবার ভাড়া না পাওয়ার অভিযোগও। এমন প্রেক্ষাপটে নিরবচ্ছিন্ন ফাইভ-জি সেবা দিতে অন্তত ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ টাওয়ারে ফাইবার সংযোগ থাকা প্রয়োজন। তাই গাইডলাইনে সংশোধনী এনে ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরির সুযোগ চায় মোবাইল অপারেটররা।