নিখোঁজের সাত দিন পর সিলেটের কানাইঘাটের শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের (৬) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মুনতাহা সদর ইউনিয়নের বীরদলের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।
রবিবার (১০ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে মুনতাহার নিজ বাড়ির পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কানাইঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খালেদ আহমদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফিরে প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলা করতে যায় মুনতাহা। কিন্তু বিকেল হলেও বাড়ি না ফেরায় খোঁজ নিতে গিয়ে মুনতাহার আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। শিশুটির খোঁজ দিতে ফেসবুকে অনেকে পোস্ট দিয়েছিলেন।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আওয়াল জানান, মুনতাহার তার গলায় রশি প্যাঁচানো ছিল। শরীরে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় মুনতাহার হাউস টিউটর ও টিউটরের মা-মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ। তাৎক্ষনিকভাবে তাদের নাম জানা যায়নি। তবে তারা মুনতাহাদের পশের বাসারই বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ওসি আরও বলেন, ‘গত রাতেই সন্দেহবশত আমরা মুনতাহার হাউস টিউটরকে ধরে নিয়ে আসি। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হচ্ছিল। তখন হাউস টিউটরের বাড়ির দিকে নজর রাখার জন্য রাতেই আমরা মুনতাহার পরিবারের সদস্যদের বলি।’
তিনি বলেন, ‘ভোরের দিকে মুনতাহার পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান বাড়ির পাশের একটি ছড়ার মাটি খুঁড়ে মুনতাহার মরদেহ পাশের পুকুরে ফেলে দেন ওই হাউস টিউটরের মা। সাথে সাথে আমাদের খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি এবং হাউস টিউটরের মা ও তার নাতনিকে ধরে নিয়ে আসি।’
ওসি বলেন, ‘আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে হাউস টিউটর ও তার মা মুনতাহাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তবে কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, তা এখনও জানা যায় নি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।’
মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ বলেন, মরদেহ এখন ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতাল মর্গে আছে।
এর আগে মুনতাহার পরিবার দাবি করে, তাকে পরিকল্পিতভাবে ‘অপহরণ’ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করা হয়েছিলো। ‘অপহরণকারীকে’ ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল।
গত ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরে মুনতাহা। পরে প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। কিন্তু বিকেল হলে বাড়ি না ফিরলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।
পূর্বকোণ/পিআর