চলতি বছরের আট মাসে সারাদেশে বজ্রপাতে ১৫২ জন কৃষকসহ মোট ২৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এর মধ্যে বেশিরভাগই পুরুষ বলে জানিয়েছে সেভ দ্যা সোসাইটি এন্ড থান্ডারস্টর্ম এওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএএফ)। শনিবার (০৫ অক্টোবর) রাজধানীর তোপখানা রোডে সংগঠনটির কার্যালয়ে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
সংগঠনটি জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে বজ্রপাতে ২৯৭ জন মানুষ মারা গেছে। এছাড়া এই আট মাসে বজ্রাঘাতে আহত হয়েছেন ৭৩ জন। নিহতদের মধ্যে ১১ শিশু, ৫৫ জন নারী রয়েছে। নারীর মধ্যে ছয়জন কিশোরী। এছাড়া মোট মৃত্যুর ২৪২ জনই পুরুষ। পুরুষের মধ্যে কিশোরের সংখ্যা ১৭ জন।
সংগঠনটি আরও জানায়, ফেব্রুয়ারি মাসে বজ্রপাতে মারা গেছে একজন। মার্চ মাসে মৃত্যু নয়জনের। এর মধ্যে আটজন পুরুষ ও এক নারী রয়েছে। মার্চে আহত হয়েছে ছয়জন। এর মধ্যে ছয়জনই পুরুষ। এপ্রিল মাসে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১১ নারী ও এক শিশু এবং দু’জন কিশোরী রয়েছে। এপ্রিলে আহত হয়েছেন একজন পুরুষ।
মে মাসে মৃত্যু হয়েছে ৯৬ জনের। এর মধ্যে পুরুষ ৭৯ জন, নারী ১৭, শিশু দুই এবং কিশোর দুই ও কিশোরী একজন। মে মাসে ২৮ জন আহত হয়েছেন। তার মধ্যে পুরুষ ২৩, নারী রয়েছে পাঁচজন। জুন মাসে মৃত্যু হয়েছে ৭৭ জনের। এর মধ্যে পুরুষ ৬১ জন, নারী ১৬ জন, শিশু পাঁচ, পুরুষের মধ্যে কিশোর রয়েছে সাতজন। এ মাসে আহত হয়েছেন ১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২, নারী দু’জন।
জুলাই মাসে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। এর মধ্যে নারী এক এবং ১৮ জনই পুরুষ। এ মাসে আহত হয়েছে ১০ জন। এর মধ্যে একজন নারী এবং নয়জনই পুরুষ। আগস্টে বজ্রপাতে মোট ১৭ জন মারা গেছে। এর মধ্যে তিনজন নারী ও ১৪ জন পুরুষ। তার মধ্যে রয়েছে এক শিশু, এক কিশোর ও এক কিশোরী। আহত হয়েছেন দু’জন পুরুষ।
এছাড়া সেপ্টেম্বর মাসে বজ্রপাতে মোট ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৪১ জন পুরুষ ও ছয় নারী রয়েছে। নারী ও পুরুষের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। পুরুষের মধ্যে চারজন কিশোর ও নারীর মধ্যে দুই কিশোরী রয়েছে। এ মাসে আহত হয়েছেন ১২ জন। এর মধ্যে ১০ পুরুষ ও দু’জন নারী রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ১৩ জন মারা গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ফেনীতে ১২, কক্সবাজারে ১০, জয়পুরহাটে ১৩, হবিগঞ্জে ১৩ এবং গাইবান্ধায় ১০ জনের মৃত্যু হয়। ধান কাটা, ঘাস কাটা, গরু আনা ও নানান ধরনের কৃষিকাজের সময় বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ৮ মাসে শুধু কৃষিকাজের সময় বজ্রপাতে ১৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু গরু আনতে গিয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়।
এছাড়া মাছ ধরার সময় ৫২ জন জেলের মৃত্যু হয়েছে। আম কুড়ানোর সময় ১১ জন, ফাঁকা রাস্তায় চলাচলের সময় ১৫, ঘরে থাকাকালীন ২৭, পাথর উত্তোলনের সময় ৩, বাড়ির আঙিনায় খেলার সময় ১৪ শিশু-কিশোর ও গাড়িতে থাকাকালীন একজনের মৃত্যু হয়েছে।
পূর্বকোণ/মাহমুদ