চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

তানজিম ছরোয়ারকে নিয়ে যা বললেন তার রুমমেট –

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৫:৪২ অপরাহ্ণ

ছেলেটা আমার রুমমেট ছিল- চকরিয়া আর্মি ক্যাম্পে। আমার শখের বিড়াল চার্লি আর সিম্বা ওরই দেয়া উপহার। সারাদিন-রাত অফিসের কাজে ইউনিটের জুনিয়র অফিসার হিসেবে ও খুবই ব্যস্ত থাকত। কিন্তু সেই লাগামছাড়া ক্লান্তিতেও ওর মুখের হাসিটা কখনো মলিন হতে দেখিনাই। অফিস যাওয়ার টাইমে প্রায় দিন ও আমার বাইকটা নিয়ে অফিস চলে যেত, আমিও ভান করতাম আমি আজকে অফিসে বাইক নিব না। ও আসলেই আমার ছোট ভাইয়ের মত ছিল। রুমে এসে কখনো কি খাব জিজ্ঞেস করত, এটা সেটা বানাত, গিটার নিয়ে গান করতে করতে হঠাৎ থেমে যেত যখন দেখত আমি নামাজে দাঁড়িয়েছি। খুব মনোযোগী শ্রোতা ছিল ছেলেটা, চোখ দুটো কথা বলত ওর। আজ সেই চোখে কোন দৃষ্টি নেই। অপারেশনে রাতের অন্ধকারে গলায় গুলি করার পর দুইজন স’ন্ত্রাসী সেই চোখটার ভিতরেও ছুরি গেথে দিয়েছে। দেহখানা নিথর, কথা বলা চোখগুলো আজ শুধু নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে আছে।
একটা বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭টা অফিসার মারা যাওয়ার সময় আমি ছিলাম না, সেই সময় প্রত্যেকটা অফিসারের বুকের মাঝে সেই অসহায়তা কি রকম ঝড় তুলেছিল তা আমি কল্পনা করতে পারি না। তবে এবার সেই রক্তের দাগ যেন এই ইউনিফর্মে না লাগে আল্লাহর কাছে আমি সর্বান্তকরণে সেই দোয়া করি। আর যদি অনেক কিছুর ভিড়ে এটাও কোন স্রোতে হারিয়ে যায় তবেও আমরা যেন জানি, উপরে যিনি আছেন একদিন তার সামনে সব প্রকাশ হবেই। তিনি ছাড় দেন, তবে ছেড়ে দেন না। ছেলেটা কি অবর্ণনীয় কষ্ট পেয়েছে মৃত্যুর সময় তা আমার কল্পনায় শুধু ভেসে ভেসে আসে। একটু শ্বাসের জন্য হাসফাস, বুটের আওয়াজে হয়ত চাপা পড়ে যাচ্ছিল ওর কাতরানোর আওয়াজ। যে কষ্টটা আমার ভাইটা মৃত্যুর সময় পেয়েছে, আল্লাহ যেন ওকে জান্নাতুল ফেরদৌস দিয়ে ওর সেই যন্ত্রণা লাঘব করেন।

ক্যাপ্টেন আসিফ সরকারের ফেসবুক থেকে নেওয়া

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট