চট্টগ্রাম শনিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৪

২০৪১-এর পর ২১০০ সাল; শেখ হাসিনার টার্গেট অনেক লম্বা: ওবায়দুল কাদের

অনলাইন ডেস্ক

৩ জুলাই, ২০২৪ | ৯:১৫ অপরাহ্ণ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপির মনের জোর কমে গেছে, গলার জোর বেড়ে গেছে। একটা কথা আছে, মানুষের শক্তি যত কমে, মুখের বিষ তত উগ্র হয়। বিএনপির নেতাদের মুখের কোনও ট্যাক্স নাই। তাদের মুখে কোনও লাগাম নাই। লাগাম দিয়ে টানবেন? লাগাম দিয়ে টেনে লাভ নাই। বিএনপি বেপরোয়া গাড়ি চালায়। কখন কোথায় দুর্ঘটনা ঘটায়, কেউ জানে না।’ 

 

রিজার্ভ বেড়ে গেছে, রেমিট্যান্স বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মনে রাখবেন বঙ্গবন্ধু হত্যার পর শেখ হাসিনার মতো এত সৎ, দক্ষ, পরিশ্রমী, কূটনৈতিক নেতা বাংলাদেশে একজনও আসেনি। বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন স্বাধীনতা, শেখ হাসিনা এসেছেন মুক্তি দেওয়ার জন্য। সেই মুক্তির সংগ্রাম বাংলাদেশে আজও চলছে। সামনে ২০৪১ সাল, তারপর ২১০০ সাল। শেখ হাসিনার টার্গেট অনেক লম্বা। আমরা তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গড়ার লড়াই করে যাচ্ছি।’

 

আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার (৩ জুলাই) বিকালে সাভারের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

 

বিএনপির নেতৃত্বের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি কি চলে, না চালায়? কে চালায়? খালেদা জিয়া? বিএনপি চালায় লন্ডন থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে। সড়কপথে নয়, নদীপথে নয়, আকাশপথে চলে বিএনপি। আকাশপথে ডাক আসে। বিএনপির নেতাদের দিনের আহার, রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কখন তারেক রহমানের ডাক আসে, কখন কার চাকরি নট হয়ে যায়। মির্জা ফখরুল সাহেবও শান্তিতে নাই। বড় বড় নেতারা আতঙ্কে আছে। কখন কার গদি শেষ হয়ে যায়, এজন্য তারা তারেক আতঙ্কে আছে। সেই আতঙ্কে রাতের ঘুম হারাম তাদের।’

 

বিএনপির নতুন কমিটি সম্পর্কে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন কমিটি কেউ জানে? নতুন কমিটি ভুয়া, বিএনপি ভুয়া। নতুন কমিটির নতুন কর্মসূচি ভুয়া। বিএনপির আন্দোলন কবে হবে? ঈদের পরে, এ বছর নাকি পরের বছর। আসলে দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়, আন্দোলন আর হয় না। মরা গাঙ্গে জোয়ার আর আসে না। বিএনপির হাত, আন্দোলনের হাত ভেঙে গেছে। এখন পরনির্ভর। এখন তারা করছে পরনিন্দা।’

 

আজই দুপুর বেলা শিক্ষকদের আন্দোলন এবং কোটা আন্দোলনে বিএনপি সমর্থন দিয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোটা আন্দোলন আগেও ছিল, এখনও আছে। তাদের ওপর ভর করে আন্দোলন করছে বিএনপি। পরনির্ভর হলে আন্দলন হয়? তারা ভয় দেখায় ভারত নিয়ে, তারা বলে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া হয়ে গেলো। তারা বলে শেখ হাসিনা ইন্ডিয়া গেলে কিছুই আনতে পারেন না। ৬৮ বছরের সীমান্ত সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে ২৫ বছরের মৈত্রী চুক্তি ছিল বলে ছিটমহল সমস্যা ও সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে। গঙ্গা নদীর পানি আমরা বুঝে পেয়েছি।’    

খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তিন হাজার জামদানি শাড়ি নিয়ে ইন্ডিয়ায় গেছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চাকর-বাকর থেকে শুরু করে সবাইকে সমানে সমানে বিতরণ করেছে। ফিরে আসার পর তার কাছে গঙ্গার পানি নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গঙ্গার পানির কথা বলতে ভুলে গেছি। গঙ্গার পানির কথা বলতে ভুলে যায়। কোন মুখে এখন বিএনপি নেতারা তিস্তার পানির কথা বলেন। তিস্তা নদীর হিস্যা ও অভিন্ন নদীর পানির হিস্যা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাই আনবেন। কারও কথায় বাংলাদেশ ইন্ডিয়া হবে না। ৫৩ বছরে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া হয়ে যায়নি।’ 

 

তিনি আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তির পর খালেদা জিয়া বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত বাংলাদেশ থাকে কিনা। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত ইন্ডিয়া হয়ে যাবে। হয়েছে? বেগম জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগে ভোট দিলে মসজিদে উলুধ্বনি হবে, আজান হবে না, হয়েছে? আসলে তারা অবান্তর কথা বলে।’ 

 

আবারও খেলা হবে, বিএনপির আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আবারও খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে। আগুন নিয়ে আসবা, খেলা হবে। আগুন নিয়ে এলে খবর আছে। বড় বড় পাতিল দিয়ে সাত দিন ধরে রান্নাবান্না, মশার কয়েল নিয়ে শুয়েছিল রাস্তার ওপর। ২৮ অক্টোবর পল্টন থেকে পালালো কারা? এক মিনিটে বিএনপির মঞ্চ খালি। তারা (ক্ষমতায় থাকতে) নিয়ে আসছে জজ মিয়ার নাটক। পরে নিয়ে এলো মিয়া আরেফি নাটক। বাইডেনের উপদেষ্টা বলে বিএনপির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে ইংরেজিতে। পরে দেখা গেলো ভুয়া। যখন তাকে এয়ারপোর্টে পুলিশ ধরলো, পুলিশের ডান্ডা খেয়ে আর ইংরেজি বলে না। বলে বরিশালের ভাষায় কথা।’

 

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতেই হবে। শেখ হাসিনার যে অঙ্গীকার আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেই ছাড়বো। একটা কথা বলি, মন্ত্রী যদি সৎ হয়, সচিব যদি সৎ হয়, ওই মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি হবে না। আমরা জনপ্রতিনিধিরা সৎ হলে দুর্নীতি পালিয়ে যাবে।’

 

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম, সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব প্রমুখ।তথ্যসূত্র :বাংলা ট্রিবিউন

 

 

পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট