চট্টগ্রাম সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিশ্ব বাবা দিবস আজ

দিনটি শুধুই বাবাদের জন্য

মিহরাজ রায়হান

১৬ জুন, ২০২৪ | ১:৩৯ অপরাহ্ণ

‘বাবার কাছে হাটতে শিখি, শিখি চলা-বলা, সারাটাদিন কাটতো আমার জড়িয়ে তার গলা।’ ছোট্ট সোনামণির আধো আধো বুলি ‘পা-পা’ থেকে যেই শব্দটা উঠে আসে, তার পূর্ণাঙ্গ রূপ বাবা। যার হাতের আঙুল ধরে হাঁটতে শেখা, সন্তানের কাছে সেই ‘বাবা’ একটা নির্ভরতার নাম। বাবা মানে নিখাদ আশ্রয়, বটবৃক্ষের শীতল ছায়া, পরম ভরসা আর শাশ্বত চির আপন।

 

বাবা মানেই সব আবদারের জায়গা। সন্তানের জন্য এক পৃথিবী দায়িত্ব যিনি কাঁধে তুলে নেন তিনিই বাবা। জীবনের সব রং আর চাওয়াপাওয়া হাসিমুখে বিসর্জন দিতে পারেন বাবারাই। বাবার আদর্শ সন্তানকে ভালো-মন্দের পার্থক্য বুঝতে শেখায়। বাবা মানে এমন একটি শক্ত খুঁটি যার ওপর পাহাড়সম দায়িত্ব আর সাগরসম মমতায় সন্তানের পরম নির্ভরতার ছাউনি।

 

আজ বাবা দিবস। বাবাকে কৃতজ্ঞতাভরে ভালবাসা জানানোর দিন। গভীর মমতায় স্মরণের দিন। দেশে দেশে ঘরে ঘরে সন্তানেরা এই দিনে তাদের প্রিয় বাবাটাকে একটু আলাদা করে ভালোবাসা ও সম্মান জানায়। দিনটি শুধুই বাবাদের জন্য।

 

জুন মাসের তৃতীয় রবিবার প্রতি বছর বিশ্বের ১১১টি দেশে পালিত হয় বাবা দিবস। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই দিবসটি পালন করা শুরু হয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ সেপ্টেম্বরের প্রথম রবিবার বাবা দিবস পালন করে থাকে। প্রতিটি পরিবারই নিজেদের মতো করে পালন করবে দিনটি। সম্মান জানাবে তাদের বাবাকে।

 

‘বাবা’- মাত্র দুইটি বর্ণের শব্দ। অথচ এই শব্দের মাঝে আছে পরম নির্ভরতা, আছে গভীরতা। বাবা মানে বটবৃক্ষ, আদর-শাসন আর নির্ভরতার বিশাল ছায়াতল।  মা যখন তাঁর স্নেহের আঁচলে রেখে আমাদের শিখিয়ে দেন আবেগ-অনুভূতির একেকটা অধ্যায় তখন বাবা আমাদের হাঁটতে শেখান বাস্তব পৃথিবীতে।

 

আমরা বাবার হাত ধরেই পৃথিবীকে চিনি। আর একটু একটু বুঝতে শিখি বেঁচে থাকার মানেটুকু। বাবা আমাদের বন্ধু। তবে এ বন্ধুত্বের কোথায় যেন ছড়িয়ে আছে খানিক গাম্ভীর্যের মেঘ, কিন্তু ওই মেঘেই ধরা দেয় পৃথিবীর অপার সৌন্দর্য।

 

বাবা দিবসের শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় চার্চের মাধ্যমে দিনটির প্রচলন। অন্যরা বলেন, ওয়াশিংটনের ভ্যাংকুবারে প্রথম বাবা দিবস পালন করা হয়।

 

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাঁর বাবা জওহরলাল নেহেরু সম্বন্ধে একবার এক বক্তৃতায় বলেছিলেন,  My father was a statesman, I am a political woman. My father was a saint, I am not. সত্যিই জ্ঞান-গরিমায় সন্তান যতই বড় হোক না কেন বাবার সাথে কোন তুলনা চলে না সন্তানের।

 

বাবা দিবসে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা একটা বিবৃতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, একজন পুরুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে একজন ভালো বাবা হওয়া। এই দায়িত্ব পালনের কাছে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার দায়িত্ব পালনও কিছু নয়।

 

বৃদ্ধাবস্থায় সন্তানকে সবসময় পাশে পাওয়া এবং দেখার চেয়ে বড় উপহার কোনো বাবার জন্য হতে পারে না। অন্যদিকে যারা বাবাকে হারিয়েছেন তারাও বাবাকে ভালোবেসে করতে পারেন অনেক কিছু। এটা হতে পারে বাবার জন্য সৃষ্টিকর্তা কাছে প্রার্থনা, বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ করা, বাবার অপূর্ণ ইচ্ছেগুলো পূরণ করা কিংবা তিনি বেঁচে থাকতে আপনাকে যেমনটি দেখতে চেয়েছিলেন  মেধা, শ্রম আর সাধনা দিয়ে আপনার তেমনটি হতে পারা।

 

একটা দিবসের সাধ্য কি বাবার বিশালতাকে ধারণ করার। তবে বাবা দিবস পালনের মাধ্যমে যদি সমাজে বাবাদের ব্যাপারে সন্তানদের সচেতনতার মাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায় তবে ক্ষতি কী? সকল বাবার জন্য আজ রইল প্রাণ অফুরান শুভেচ্ছা।

 

পূর্বকোণ/মাহমুদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট