চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

সর্বশেষ:

পোশাক শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ১২,৫০০ টাকা চূড়ান্ত

অনলাইন ডেস্ক

৭ নভেম্বর, ২০২৩ | ৫:৪০ অপরাহ্ণ

পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।  

 

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তিনি এ কথা জানান।  এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা, বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএর সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, মজুরি বোর্ডে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

এর আগে বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সভাকক্ষে এ সংক্রান্ত  আলোচনা শুরু হয়। সেখানে মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সম্মতিতে এই মজুরি নির্ধারণ করা হয়।

 

সভায় শ্রমিক প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকার প্রস্তাব করেন। অপরদিকে মজুরি বোর্ডে পোশাক কারখানার মালিকদের প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেন। উভয়পক্ষ প্রস্তাবনায় তাদের যৌক্তিকতা তুলে ধরে।

 

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুয়ায়ী মালিক ও শ্রমিকপক্ষ মিলে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজকের যে ঘোষণা সেটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই করা হচ্ছে। ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ন্যূনতম মজুরি আট হাজার থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে।

 

মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মালিক ও শ্রমিকপক্ষ এবং নিরপক্ষে প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্রুত নতুন মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন শ্রমজীবী মানুষ আন্দোলন করে আসছেন মজুরি বৃদ্ধির জন্য। মালিকপক্ষ মজুরি বোর্ডের মধ্য দিয়ে শ্রমিকপক্ষকে নিয়ে মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। মজুরির যদি কোনো তারতম্য হয়ে যায়, আমরা শেষ সম্বল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বারস্থ হই সব সময়। ওনার মৌখিক নির্দেশে আজকে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ঘোষণা করছি। এখানে শ্রমজীবী মানুষ ও রাষ্ট্রের স্বার্থ আছে। শিল্প বাঁচলে শ্রমিক বাঁচবে। শ্রমিকের সঙ্গে শিল্পও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। উভয় দিক লক্ষ্য রেখেই মজুরি ঘোষণা করা হচ্ছে।

 

মজুরি ৫৬ শতাংশের ওপরে বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে মজুরি আছে তার ওপর মূল মজুরি ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়বে। আট হাজার থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে। ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট বহাল আছে। শ্রমিকদের রেশনের দাবি আছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একটি পরিবারের জন্য একটি ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যেই নির্ধারিত থাকবে। পরবর্তীতে এই কার্ডের মাধ্যমে রেশনিং ব্যবস্থা চালুর কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন।  

 

শ্রমিক নেতা ও মালিকদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা ফ্যাক্টরি খুলে দেবেন, শ্রমিক ভাইদের বলব কাজে যোগদান করতে। আমি আবেদন করবো, মালিকদের সহনশীল ভূমিকা রাখার জন্য। কারণ এই আন্দোলনে ভুল করুক, ত্রুটি করুক, যেটিই করুক পেটের দায়েই তো মানুষ অনেক কিছু করে। তাদের ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, তারা যেন কাজে সঠিকভাবে যোগ দিতে পারে। শ্রমিক ভাই-বোনদের বলব, শিল্পই আপনার জীবন। এই শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে। আগে ক্ষতিগ্রস্ত আপনি হবেন, মালিক কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হবে পরে। সুতরাং সেদিকে লক্ষ্য রেখে শান্তিপূর্ণভাবে যার যার কাজে গিয়ে ফ্যাক্টরিকে কর্মচঞ্চল করে তুলবেন।

 

তিনি বলেন, অর্থনীতির চাকা হলো আপনাদের কাছে। সেই চাকা যেন বন্ধ না হয়। আপনারা কর্মে যোগ দিয়ে শিল্প- কারখানায় শান্তি আনবেন, দেশের উন্নতিতে আপনাদের অবদান, বড় ভাগীদার আপনারা- এটা মাথায় রেখে কারও দিকে কোনো প্রকার উসকানিমূলক কথায় না গিয়ে আপনারা বিপথে না হাঁটেন, এটা আমাদের আবেদন। শিল্প অঞ্চলে যারা অবস্থান করেন সেসব অঞ্চলের মালিকদের আমি বলব, পারলে কিছু বাড়িভাড়া যেন মালিকরা মওকুফ করেন সে ব্যবস্থা করবেন।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট