আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে ঢাকাকে দু’টি স্পষ্ট বার্তা দিতে চায় নয়াদিল্লি। ভারতের নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটিই জানিয়েছে ভারতের প্রভাবশালী আনন্দবাজার গ্রুপের ইংরেজি পত্রিকা দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইন।
পত্রিকাটির স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট দেবদীপ পুরহিতের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে ‘জি-টুয়েন্টি’ সম্মেলনে যোগ দেয়ার সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে যে দু’টি বার্তা তুলে ধরা হবে তার প্রথমটি হচ্ছে- বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন অবশ্যই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে হবে। আর দ্বিতীয় বার্তাটি হলো- আওয়ামী লীগকে দলের ভেতরে থাকা সব চীন ও ইসলামপন্থি নেতা ঝেড়ে ফেলে অসা¤প্রদায়িক ও জনপ্রিয় প্রার্থী বেছে নিতে হবে।
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কয়েক দফা বৈঠকের পর এ দুই বিষয়ে নয়াদিল্লী-ওয়াশিংটনের ঐকমত্য হয়েছে বলেও জানায় পত্রিকাটি। তাদের দাবি, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ঢাকার বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মতপার্থক্য থাকলেও এবার তা নেই। আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ মনে করলেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের চীন ঘনিষ্ঠতা দিল্লি-ওয়াশিংটনের জন্য সমান উদ্বেগের বলে উল্লেখ করে পত্রিকাটি।
দ্য হিন্দু’র দু’টি প্রতিবেদন
এদিকে, ভারতের প্রভাবশালী অপর এক ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দু’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সম্পৃক্ততা বাড়িয়েছে ভারত। দেশটি সফররত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের টেলিফোন সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে গতকাল এমনটিই জানায় প্রভাবশালী দৈনিকটি। সাক্ষাৎকারে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিবর্তে বিকল্প তৃতীয় কোন পথ বেছে নিতে মত দেন এই নেতা।
দ্য হিন্দু-র অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে শেখ হাসিনা হারলে বাংলাদেশ দীর্ঘ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখে পড়তে পারে। ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য হিন্দু গত রবিবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। নিবন্ধটি লেখেন সাংবাদিক প্রণয় শর্মা।
প্রণয় শর্মা লেখেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা থেকে বিদায় কেবল ভারতের জন্য উদ্বেগের নয়, এতে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহিংসতা ও অস্থিরতা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর একটি বক্তব্য তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। আমির খসরু বলেছেন, ‘যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়ে যাবে।’ প্রকৃতপক্ষে জামায়াত ও তাদের সমমনা দলগুলো নিয়ে বিএনপি বাংলাদেশে শাসন পরিচালনা করবে- এমন সম্ভাবনা ঢাকা ও দিল্লিতে উদ্বেগ ও শঙ্কা তৈরি করেছে।
পূর্বকোণ/আরডি