অতীতের চেয়ে এবারের সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশিরা অনেক দিন আগে থেকে সক্রিয়। বিদেশিদের এ ধরনের সক্রিয় হওয়ার কারণ ও উদ্দেশ্য একমাত্র তারা ভালো বলতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
সোমবার (৩১ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।
বাংলাদেশ অতীত নির্বাচনের তুলনায় এবার বিদেশিদের দৃষ্টিভঙ্গি বা চাওয়া-পাওয়ায় কোনো পরিবর্তন দেখছেন কি না – সাংবাদিকরা জানতে চান শাহরিয়ার আলমের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, আমি কোনো পরিবর্তন দেখছি না। এটা তারা (বিদেশিরা) বলতে পারবেন, তাদের কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি না। কিন্তু ২০১৮ নির্বাচনের আগে তাদের এতোটা সক্রিয় দেখিনি, যতটা তারা এবার অনেক দিন আগে থেকে সক্রিয় হয়েছেন। এটার উদ্দেশ্য ও কারণ তারা (বিদেশিরা) বলতে পারবেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে কে আসল বা আসল না, এটা কোনো বিষয় না। আমরা সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে পেরেছি কি না, সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি কি না…তবে পরিস্কারভাবে বলি, কে নির্বাচনে এলো, কে এলো না; এটা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য বা গণতন্ত্র গ্রহণযোগ্যতার নিয়ামক উপাদান নয়। কারণ পৃথিবীতে এ রকম রাষ্ট্র নিকট অতীতে ছিল, আছে। এ গ্রুপগুলোর মধ্যে কোনো অপজিশন ছিল না সংসদে। আমাদেরও কোনো বিরোধী ছিল না। পরে জাতীয় পার্টি মহাজোট থেকে বের হয়ে বিরোধী দল হলো।
আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমি আওয়ামী লীগের মুখপাত্র নই। তবে আমি যতদূর জানি সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চায়। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমারও করতে চাই। রাজনৈতিক দলগুলোকে আপনি লন্ডন থেকে নমিনেশন নেবেন নাকি মধ্যপ্রাচ্য থেকে নেবেন, মালয়েশিয়া না ঢাকা থেকে নেবেন; এ সিদ্ধান্তে কেউ যদি না আসতে পারেন এর দায়ভার তো আমরা নেব না।
আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করতে যাচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, না। আওয়ামী লীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে আমি চাইব, সব দল নির্বাচনে আসবে। কিন্তু আমরা তো পালকি পাঠিয়ে কাউকে নির্বাচনে নিয়ে আসব না।
২০১৪ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে ওই সরকারের ধারাবাহিকতার কথা তুলে ধরেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বরেন, ২০১৪ সালে বিএনপি শুধু নির্বাচন বয়কট নয়, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে রিটার্নিং অফিসারকে খুন পর্যন্ত করেছে। ২০১৪ সালের সরকারের সফলতার যে ধারাবাহিকতা সেখানে বন্ধুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে, স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ পরিণত হয়েছে, দ্বিতীয় ধাপে গেছে, তৃতীয় ধাপে গেছে। যত মেগা প্রকল্প দেখছেন, এগুলো ২০১৪ সালের ধারাবাহিকতায় বাস্তবায়নে প্রায় শেষের দিকে এবং সেই সরকারের গ্রহণযোগ্যতার কোনো কমতি ছিল না।
যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন শব্দটা থেকে সরে যাওয়া নতুন কোনো কৌশল কি না -জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাড়তি কোনো কিছু করতে হবে এমন প্রত্যাশা নিয়ে কেউই আরেক দেশকে কিছু বলতে পারে না। এ কারণে তারা হয়তো বলছেন না।
আরেকটা ১/১১ আশঙ্কা বা নির্বাচন বানচালের চেষ্টার কথা বলা হচ্ছে- এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দল হিসেবে বর্তমান নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এক জায়গায়। আওয়ামী লীগের বাইরে বঙ্গবন্ধুকন্যার ভিত এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে, অন্য সরকারের সময়ের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।
শাহরিয়ার আলম বলেন, এখানে আমরা এমন কোনো কর্মকাণ্ড করিনি। ওটা (১/১১) বিএনপির নিজস্ব চোরাবালির ফাঁদ ছিল। ১/১১ বিএনপি ডেকে নিয়ে এসেছে। তারা যতটা পেরেছে স্ক্র্যাচ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে সংজ্ঞা পরিবর্তন করেছে, বয়স পাল্টাচ্ছে, তাদের রাষ্ট্রপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করেছে। এ রকম লিডারশিপ এখন নেই। আমি মনে করি না এখন এ রকম কিছু হওয়ার সম্ভবনা আছে।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ