রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলের ‘শান্তিপূর্ণ অবস্থানে’ পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের হামলার অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সব কিছুরই একটা সীমা থাকে। আশা করি সরকার সেটা মনে রাখবে।’
শনিবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
লিখিত বক্তব্যে ফখরুল উল্লেখ করেন, সরকারি এবং সরকার দলীয় বাহিনীর বেআইনি ও সন্ত্রাসী তৎপরতার জবাব দেওয়ার ক্ষমতা জনগণের রয়েছে। কিন্তু সেই ক্ষমতা প্রয়োগের ফলে যে অবাঞ্ছিত ও মর্মান্তিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো- আমরা তা বরাবরই পরিহার করতে চেয়েছি এবং আজও করেছি। এটা আমাদের দুর্বলতা নয়, জনগণ ও গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধতা।
তিনি বলেন, কিন্তু নিশিরাতের অবৈধ সরকারের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে আমাদের এই দেশটা স্বাধীন হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো প্রাণের বিনিময়ে। আমরা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। জীবন দিয়েছি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্যও। গত ১৪ বছর আমাদের হাজারো নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। গুমের শিকার হয়েছেন শত শত নেতাকর্মী। নির্যাতিত হয়েছেন কয়েক হাজার। মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন লাখো নেতাকর্মী। গণতন্ত্র চাই বলেই এত কিছুর পরও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথেই আছি আমরা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা জেনেছি মাতুয়াইল ও শ্যামলীতে গাড়িতে আগুন দেওয়ার ও ভাঙচুর করার ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। অথচ পত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সুস্পষ্ট প্রমাণ দিয়ে খবর বেরিয়েছে, পুলিশের সামনেই এসব ঘটনা ঘটিয়ে ভিডিও করে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে চলে গেছে। কারা এটা করতে পারে- তা অনুমানের জন্য বেশি বুদ্ধিমান হওয়ার প্রয়োজন নেই। নিজেরা অপরাধ করে বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিচ্ছি।
ফখরুল বলেন, বিনা উস্কানিতে প্রতিবাদী জনতার শান্তিপূর্ণ অবস্থানে গুলি, টিয়ারগ্যাস চালানো এবং সশস্ত্র আক্রমণ মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখে দেশ-বিদেশের জনগণ এই স্বৈরাচারী সরকারের অবৈধ ক্ষমতা জোর করে ধরে রাখার বীভৎস অপপ্রয়াস দেখে স্তম্ভিত হয়েছে। তাদের নির্মম আক্রোশে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মাথায় মারাত্মক রক্তক্ষরণ, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানসহ অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হওয়া এবং অগণিত নেতাকর্মীকে নির্বিচারে গ্রেপ্তারের ঘটনা প্রমাণ করে যে ক্ষমতালোভী এই সরকারের হাতে দেশের কোনও নাগরিক নিরাপদ নন। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণকারী এই সরকার আজ জনগণের শুধুই ঘৃণা ও ধিক্কার পাওয়ার যোগ্য।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমানউল্লাহ আমান সাহেবরা পরীক্ষিত নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির নেতা নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ