প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রায় ২৮ হাজার সহকারী শিক্ষক পাচ্ছেন পদোন্নতি। এই পদোন্নতির কার্যক্রম অনেকটাই শেষ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন শুধু অপেক্ষা আদেশ জারির। তবে পদোন্নতি-সংক্রান্ত এই আদেশ জারি হবে পর্যায়ক্রমে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র বলছে, গত ৩০ জুন পর্যন্ত সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ ছিল ২৯ হাজার ৮৬২টি। এর মধ্যে নিয়ম অনুযায়ী ২৭ হাজার ৯০৭ জন সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পাবেন। তবে অবসরের কারণে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ বাড়লে পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকের সংখ্যাও বাড়বে। আর বাকি ১ হাজার ৯৫৫টি পদ সংরক্ষিত থাকবে সরাসরি নিয়োগের জন্য। এই নিয়োগ হবে পিএসসির মাধ্যমে।
সূত্র বলছে, এরই মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই শেষে কিশোরগঞ্জ, মেহেরপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার পূর্ণাঙ্গ গ্রেডেশন তালিকা এবং টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার ১১টি উপজেলার তালিকা সরকারি কর্ম কমিশনে পাঠিয়েছে। ইতোমধ্যে পিএসসি লক্ষ্মীপুরের পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকদের তালিকা চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এখন নিয়ম অনুযায়ী অফিস আদেশ জারি করবে মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত গণমাধ্যমকে জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি-সংক্রান্ত সব জটিলতা দূর হয়েছে। শিক্ষকদের গ্রেডেশন তালিকা চূড়ান্ত করে ধারাবাহিকভাবে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। আশা করছি, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৯ সালে একটি মামলার কারণে সারা দেশে পদোন্নতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে হাজার হাজার প্রধান শিক্ষকের পদ বছরের পর বছর শূন্য থাকে। ২০১৪ সালে এ মামলার নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু একই বছর প্রধান শিক্ষকের পদ দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। এতে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ ও পদোন্নতি পিএসসির অধীনে চলে যায়। ফলে আবার বন্ধ হয়ে যায় পদোন্নতির মাধ্যমে শূন্য পদ পূরণ। পরে ২০১৭ সালের ২৩ মে থেকে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয় সহকারী শিক্ষকদের।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মামলা ছাড়াও সারা দেশের সহকারী শিক্ষকদের গ্রেডেশন তালিকা চূড়ান্ত করা নিয়ে বড় ধরনের জটিলতা ছিল। কারণ, বিষয়টি ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। এ সমস্যা উত্তরণে ‘সমন্বিত গ্রেডেশন ব্যবস্থাপনা’ নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। এরপরই ডিজিটাল পদ্ধতিতে চূড়ান্ত হয় গ্রেডেশন তালিকা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, বর্তমানে দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এসব বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৭ জন। শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫ জন। সূত্র: কালবেলা
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ