চট্টগ্রাম বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিশ্ববাজারে গমের দাম কম, প্রভাব নেই দেশে

ইফতেখারুল ইসলাম

২২ জুলাই, ২০২৩ | ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ

আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম বেশ কমে গেছে। কিন্তু দেশের বাজারে তার তেমন প্রভাব নেই। বছরের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে গমে দাম টন প্রতি ১০০ ডলার দাম কমে গেছে। তার সুফল ভোক্তা এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা পাচ্ছে না।

 

খাতুনগঞ্জের একাধিক ব্যবসায়ীও তাতে একমত পোষণ করে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম যেভাবে পড়ে গেছে দেশেও আটা-ময়দার দাম কমে যাওয়া উচিত ছিল। তবে সম্প্রতি ইউক্রেন-রাশিয়া শস্য রপ্তানি চুক্তি আর নবায়ন না হওয়ায় বিশ্ববাজারে গমের দাম ফের বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। ইতোমধ্যে কম দামে কেনা গম ইউক্রেন-রাশিয়া চুক্তি নবায়ন না করার অজুহাতে বেশি দামে বিক্রি করতে পারে আমদানিকারকরা। একইসাথে গম আমদানির বিকল্প দেশ খোঁজা উচিত বলে মনে করেন তারা।

 

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর তথ্যমতে, এক বছর আগে আটা সাদা (খোলা) এর দাম ছিল কেজি ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। প্যাকেট আটার দাম ছিল কেজি ৪৮ থেকে ৫৪ টাকা। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। খোলা ময়দা প্রতি কেজির দাম ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। যা বর্তমানে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত ময়দা প্রতি কেজির দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। বর্তমানেও একই দামে বিক্রি হচ্ছে।

 

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২০ সালে বিশ্ববাজারে গমের দাম ছিল টন প্রতি ২৩১ ডলার (ইউএস-এইচআরডব্লিও) ও ২২৭ ডলার (এসআরডব্লিও)। ২০২১ সালের গমের বৈশ্বিক দাম ছিল যথাক্রমে ৩১৫ ও ২৮১ ডলার। কিন্তু ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বছরজুড়ে গমের গড় দাম ছিল ৪৩০ ডলার ও ৩৮২ ডলার। সর্বশেষ জুন মাসে গমের বৈশ্বিক দাম ২০২২ সালের চেয়ে অনেক কমে যথাক্রমে ৩৪৫ ও ২৫৭ ডলারে নেমে আসে। তবুও পণ্যটির দাম আশানুরূপ কমায়নি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। গমের ধারাবাহিক দরপতনের প্রেক্ষিতে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম কমানোর পর্যায়ে আসার মুহুর্তে রাশিয়ার কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমদানি নির্ভর বাংলাদেশের জন্য নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ বিশ্বের ২৮ শতাংশ গমের সরবরাহকারী রাশিয়া ও ইউক্রেন।

 

কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন পূর্বকোণকে বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কথা শুনেই বাংলাদেশে দাম বেড়ে যাওয়া আর দাম কমে গেলে খুচরা বাজারে না কমানো এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। বাজার পর্যবেক্ষণের জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। সংস্থাগুলো সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে ব্যবসায়ীরা দাম কমাতে বাধ্য হতো।

 

দেশের ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বর্তমানে কানাডা থেকে আমদানি হওয়া গম লেনদেন হচ্ছে মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) ২০০০ টাকা, এসও (সরবরাহ আদেশ) পর্যায়ে ১৮৫০ টাকায়। এছাড়া রাশিয়া ও ভারত থেকে আমদানি হওয়া গম লেনদেন হচ্ছে এসও পর্যায়ে ১৪৫০ থেকে ১৪৬০ টাকায়। যদিও একই মানের গম গুদাম থেকে সরাসরি সংগ্রহ পর্যায়ে বা রেডি গম ১৬০০ টাকায়।

 

খাতুনগঞ্জের এসও ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রাজ্জাক বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাজারে গমের যে দাম তাতে প্রতিমণ গম ১২০০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। কিন্তু আমদানিকারকরা সেভাবে দাম কমায়নি। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারের বাজার মনিটরিং কার্যক্রম বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।

 

পূর্বকোণ/মাহমুদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট