জনতা ব্যাংকের সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর শাখার পিয়ন মো. রঞ্জু আকন্দের বিরুদ্ধে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
গ্রাহকের টাকা জমা দেওয়ার কথা বলে এ আত্মসাত করা হয় বলে জানা যায়। এরপর থেকে পলাতক রয়েছেন পিয়ন রঞ্জু আকন্দ। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
রবিবার (৯ জুলাই) সকালে প্রায় শতাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক তাদের জমা করা অর্থ অ্যাকাউন্টে দেখতে না পেয়ে ব্যাংকরে শাখা ব্যবস্থাপকের কার্যালয় ঘেরাও করেন। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শাহজাদপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম মৃধা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ সময় ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের জানান, পিয়ন রঞ্জুর বাড়ি পৌর সদরের পাড়কোলা গ্রামে। তিনি শ্রমিক লীগের নেতা ও পোড়কোলা দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকে আগত সহজ সরল গ্রাহকদের সহযোগিতা করার কথা বলে তাদের জমা করা অর্থ নিজের কাছে রেখে ব্যাংকের সিল ও স্বাক্ষর দিয়ে রিসিভ কপি দিয়ে দিতেন। অপর দিকে গ্রাহকরা টাকা তুলতে এলে চেক রেখে নিজেই টাকা দিয়ে দিতেন। এভাবে প্রবাসীদের লাখ লাখ টাকা ব্যাংকে জমার কথা বলে তা অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দিতেন।
রঞ্জু ব্যাংকের চুক্তিভুক্ত পিয়ন হয়েও রহস্যজনক কারণে মূল ফটকে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা লেনদেন করলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। তিনি সব সময় নিজেকে জনতা ব্যাংকের এমডি আব্দুস সালামের ঘনিষ্ট আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সামনেই অপকর্ম চালাতেন।
এ ব্যাপারে শাখা ব্যবস্থাপক জেহাদুল ইসলাম জানান, পিয়ন রঞ্জু আকন্দ ব্যাংকের নকল সিল তৈরি করে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি ব্যাংকের এমডির আত্মীয় পরিচয় দিয়ে সবাইকে জিম্মি করে অপকর্ম করেছেন।
জনতা ব্যাংক এরিয়া অফিস সিরাজগঞ্জের ডিজিএম জাহিদুল আলম জানান, প্রাথমিক তদন্তে ওই অস্থায়ী পিয়ন রঞ্জু গ্রাহকদের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা যায়। এ বিষয়ে থানাকে অবহিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) কামরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় পুলিশের তদন্ত শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনুযায়ী প্রতারক রঞ্জুকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পূর্বকোণ/মাহমুদ