চট্টগ্রাম রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

গৃহকর্মীদের ধর্ষণের দায়ে চাকরি হারালেন উপসচিব

অনলাইন ডেস্ক

৬ জুলাই, ২০২৩ | ১০:৩০ অপরাহ্ণ

সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের সেইফহোমে আশ্রিত গৃহকর্মীদের যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের দায়ে মো. মেহেদী হাসান নামে এক উপসচিবকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে সরকার।

তিনি রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে কাউন্সেলর পদে দায়িত্ব পালনকালে এ অপরাধে করেন।

মেহেদী বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২১তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তাকে এর আগে সাময়িক বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করে রাখা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্তের পর বৃহস্পতিবার (০৬ জুলাই) চাকরিচ্যুতির প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে জানা গেছে, মেহেদী সৌদি আরবে রিয়াদ দূতাবাসে কাউন্সিলরের দায়িত্বে থাকার সময় সেখানে আশ্রিত গৃহকর্মীদের যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ করেছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় মেহেদী হাসানকে ওই পদ থেকে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি অবমুক্ত করা হয়। তারপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে অসদারচণের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দিয়ে ওই বছরের ১০ মার্চ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

২০২১ সালের ৮ এপ্রিল লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির আবেদন করেন মেহেদী হাসান। ব্যক্তিগত শুনানিতে দাখিলকরা জবাব ও বক্তব্য সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে ওই বছরের ২০ জুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

তদন্তে মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে দূতাবাসের সেইফহোমে আশ্রিত কয়েকজন গৃহকর্মীকে অপ্রয়োজনীয় একান্ত সাক্ষাৎকারের নামে অশ্লীল প্রশ্ন ও আচরণসহ বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা এবং যৌন নির্যাতন (ধর্ষণ) করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর মেহেদীর বিরুদ্ধে অসদাচারণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী মেহেদীকে গুরুদণ্ড দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। ওই নোটিশে কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অন্য কোনো গুরুদণ্ড দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাবে মেহেদী তার বিরুদ্ধে আনীত এবং তদন্তে প্রমাণিত অভিযোগের বিপরীতে কোনো সন্তোষজনক বক্তব্য দিতে সক্ষম হননি। ফলে মেহেদীর দাখিল করা জবাব ও তদন্ত প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের গুরুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সই করা প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ পাওয়ার পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়েই মেহেদী হাসানকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট