চট্টগ্রাম রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে বাংলাদেশ আর হাত পাতে না: শেখ হাসিনা

অনলাইন ডেস্ক

৫ জুলাই, ২০২৩ | ৯:৩০ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ এখন আর উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর কাছে ‘হাত পাতে না’, বরং প্রয়োজনে ঋণ করে এবং সুদসহ তা ফেরত দেয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্হিবিশ্বে যারা বাংলাদেশকে নিয়ে ‘হেয় করত’, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের পর তাদের ধারণা বদলেছে বলে মনে করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করব, সেটা আমি করতে সক্ষম হয়েছি। এই একটা সিদ্ধান্ত আমি মনে করি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি… আগে যারা মনে করত এই দেশ শুধু হাত পেতে চলবে, তারাও কিন্তু এখন সেটি মনে করে না।

“বরং আমরা আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থ ধার নিই। আমরা কারো কাছ থেকে হাত পেতে নিই না। আবার তা সুদসহ ফেরতও দিই।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আগে কিন্তু ভাবখানা এমন ছিল যে আমরা ভিক্ষা নিচ্ছি। এই যে শর্ত দেওয়া, তবে পদ্মা সেতুর ওই সিদ্ধান্তের পর অতটা শর্ত টর্ত কেউ দিতে সাহস পায় না।”

“ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ, সেটা আমরা করে দেখিয়েছি। প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি। বাংলাদেশ আর কারো কাছে হাত পেতে চলবে না, সেইভাবে আমরা দেশকে গড়ে তুলেছি।“

২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আছেন শেখ হাসিনা। এই সময়ে সরকারের কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, “বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১ থেকে ২০৪১ প্রণয়ন করে আমরা বাস্তবায়ন শুরু করেছি। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আমরা সেই কাজ শুরু করেছি। তাছাড়া জাতিসংঘের এমডিজি বাস্তবায়ন আমরা সফলতার সঙ্গে করছি। অর্থাৎ সাসটেইনেবল গোল সেটাও আমরা কিন্তু বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।”

জাতির পিতার বক্তব্য থেকে উদ্ধৃত করে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ইনশাল্লাহ বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ২০২৩ সালে বাংলাদেশ অনেক পাল্টে গেছে। আজকে দারিদ্রের হার ৪১ ভাগ থেকে ১৮ ভাগে নামিয়ে এনেছি। অতিদরিদ্র ২৫ ভাগ থেকে ৫ ভাগে নামিয়ে এনেছি।“

তিনি বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট জনশক্তি, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সোসাইটি স্মার্ট জনগণ– সেইভাবেই আমরা দেশকে গড়ে তুলব। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।“দেশের প্রতিটি বাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে জানিয়ে শান্তিরক্ষা মিশনে কতর্ব্যরতদের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “শুধু দেশে নয়, শান্তিরক্ষা মিশনে যারা কাজ করে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় গুণ হল, তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে স্থানীয় মানুষকে সেবা দিয়ে থাকে। এজন্য তারা প্রত্যেকের কাজে খুব মর্যাদা পায় এবং আমি খুব গর্ব করে বলি, যে দেশে আমাদের বহিনীর সদস্যরা কাজ করেছে, সে দেশের সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধান আমাদের বাহিনীর প্রশংসা করে, তখন সত্যি আমার বুক গর্বে ভরে যায়। আমরা এতে যে সম্মান পাচ্ছি সেটা ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”

পিজিআরের সক্ষমতা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৮ সালে ক্ষমতায় এসে গার্ড সদস্যদের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে গার্ড ভাতা প্রচলন করে।

“প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আরো সহজ করতে সেনাসনিবাসে একটি ইনডোর পিস্তল ফায়ারিং রেঞ্জ স্থাপন করা হয়েছে। রেজিমেন্টের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ২০১৩ সালে জনবল বৃদ্ধিসহ একটি স্বতন্ত্র রেজিমেন্টে রূপান্তরিত করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় এই রেজিমেন্টে আর্মড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) যুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা একটি ১৪ তলা ভবন নির্মাণ করে দিয়েছি।“

ভবিষ্যতেও গার্ড সদস্যদের কল্যাণে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান সরকারপ্রধান।

এছাড়া গণভবনে সৈনিক আবাস ও অন্যান্য সুবিধার কথা বিবেচনা করে এ বছর পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে ৫.৫ একর জমি ‘পিজিআর’ এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

ওই জায়গার উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এখানে পরিকল্পিত পার্ক হবে। যেখানে শিশু পার্ক থেকে সব ধরনের সুযোগ থাকবে। কেউ যদি কোনো অনুষ্ঠান করতে চায় সেই জায়গাও থাকবে।”

রেজিমেন্টের প্রতিটি সদস্যকে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। সূত্র : বিডি নিউজ

 

পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট