চট্টগ্রাম বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪

সর্বশেষ:

আজ পবিত্র হজ

সৌদি আরব প্রতিনিধি

২৭ জুন, ২০২৩ | ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র হজ আজ। হজ পালনে আসা বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৬০টি দেশের ২০ লাখেরও বেশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লী আজ জমায়েত হচ্ছেন আরাফাতের ময়দানে। ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল-হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল-মুলক, লা শারিকা লাক’- অর্থাৎ আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই-  এই তালবিয়াহ উচ্চারণ ও মহান আল্লাহ তাআলার একত্ব ও সার্বভৌমত্ব ঘোষণায় আকাশ-বাতাস মুখর করবেন ২০ লক্ষাধিক হজযাত্রী।

 

আজ মহানবী হযরত মোহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিদায় হজের ভাষণের স্মৃতিবিজড়িত আরাফাত ময়দানে সমবেত হবেন তারা। শ্বেতশুভ্র পোশাকে এসব হজযাত্রী জাবালে রাহমাতের পাদদেশ ও মসজিদে নামিরার আশপাশে অবস্থান নিয়ে জীবনের পরম কাক্সিক্ষত হজ পালন করবেন। মূলত এ দিনটির জন্যই পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন সক্ষম মুসলিমরা।

 

জান্নাত থেকে বিতাড়িত হয়ে বাবা আদম ও মা হাওয়া আলাইহিস সালাম পৃথিবীতে দীর্ঘদিন একাকি ঘুরতে ঘুরতে এই আরাফাতের ময়দানে এসেই মিলিত হন। রাব্বানা জালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফির লানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খসিরিন- এ দোয়া পড়ার পর আল্লাহ তা‘আলা তাদের ক্ষমা করেন এবং দু’জনের মিলন ঘটান। তাদের মিলনের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতেই বিশ্ব মুসলিমের এই মিলনমেলা প্রতি বছরই আজকের দিনে দৃশ্যমান হয়। তাদের একটাই চাওয়া আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ও তাঁর ক্ষমা।

 

গতকাল সোমবার হজযাত্রীরা মিনায় পৌঁছেছেন। সেখান থেকে আজ মঙ্গলবার মোয়াল্লিমরা গাড়িতে করে নিয়ে যাবেন আরাফাতের ময়দানে নির্ধারিত তাঁবুতে। সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে হাজিদের অবস্থান করতে হবে। এটাই মূলত হজ।

 

আজ দুপুরে ঐতিহাসিক আরাফাত প্রান্তরে অবস্থিত মসজিদে নামিরায় বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশে হজের খুৎবা দেবেন শায়খ ড. ইউসুফ মুহাম্মদ বিন সাঈদ। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ এক রাজকীয় ফরমানে এ বছর হজের খুতবার জন্য তাকে নিযুক্ত করেন। শায়খ ড.ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সাঈদ সৌদিআরবের সিনিয়র উলামা কাউন্সিলের সদস্য। তিনি মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ মাহের মুআইকিলির পরিবর্তে বিভিন্ন সময় নামাজের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

 

এ বছরও হজে আরবি খুতবা বাংলাসহ মোট ২০টি ভাষায় শোনা যাবে। বাংলা ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করবেন ড. খলীলুর রহমান। তিনি মক্কার বিখ্যাত উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন।

 

সূর্যাস্তের সাথে সাথে মাগরিব না আদায় করে হাজি সাহেবদের যাত্রা শুরু হবে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে। সেখানে যাওয়া মাত্র মাগরিব ও এশা এক আজানে, দুই ইকামাতে আদায় করবেন তারা। এরপর মুযদালিফায় মসজিদে মাশআরিল হারামের আশপাশে উন্মুক্ত আকাশের নিচে মাথা খোলা অবস্থায় রাত্রিযাপন করবেন হজযাত্রীরা। পরের দিনগুলোতে জামারাতে নিক্ষেপের জন্য এখান থেকেই পাথর সংগ্রহ করেন হজযাত্রীরা। এজন্য বিশেষ ধরনের ছোট ছোট পাথর রাখা হয় পুরে মুজদালিফা জুড়ে।

 

১০ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর আবার মিনায় ফিরে সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে যাওয়ার পূর্বে বড় জামারাতে ৭টি কঙ্কর নিক্ষেপ, কুরবানি সম্পন্ন করার পর মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম পরিত্যাগ করবেন হাজিগণ। সুযোগ বুঝে মক্কায় গিয়ে ফরজ তাওয়াফ করতে হবে ৩ দিনের মধ্যে। ১১ ও ১২ জিলহজও সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে যাওয়ার পর ৩টি জামারাতে ৭টি করে মোট ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হবে। যারা সংক্ষেপ করতে চান ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের পূর্বে মিনা ত্যাগ করবেন। পরে মক্কায় ফিরে বিদায়ের দিন বিদায়ী তাওয়াফের পূর্ব পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে প্রতি ওয়াক্তের নামাজ ও যত বেশি সম্ভব তাওয়াফে সময় কাটাবেন মুসল্লীরা।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট