কয়েক মাস ধরেই বাজেট সহায়তা হিসেবে বিদেশি ঋণ গ্রহণে সরকার তৎপর। এর বড় কারণ বৈদেশিক মুদ্রার সংকট। এমন বাস্তবতায় উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। চলতি জুন মাসের মধ্যেই অন্তত ১০২ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা আসছে। এ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাওয়া রিজার্ভ কিছুটা বাড়বে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক-এআইআইবির সঙ্গে ইআরডির পৃথক দুটি চুক্তি সই হয় গতকাল বুধবার। এই ৮০ কোটি ডলারের মধ্যে এডিবি এবং এআইআইবি সমান ৪০ কোটি ডলার করে ঋণ দিচ্ছে। টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচি (সাবপ্রোগ্রাম-২) এর আওতায় এই ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ।
ইআরডি সূত্র জানিয়েছে, অতিমারি করোনার অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, বাণিজ্য ঘাটতি, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান পতন– অর্থনীতির এ বিরূপ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন পদক্ষেপে বাজেট সহায়তার অর্থ কাজে লাগানো হবে। এডিবির ঋণে অর্থবিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর, পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ এবং সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট-সিপিটিইউসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থাপনা মজবুত করার পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সেবা সহজ করার কাজে ব্যবহার করা হবে। মাত্র এক দিন আগে গত মঙ্গলবার ফিলিপাইনে এডিবির প্রধান কার্যালয়ে এ ঋণ অনুমোদন হয়। অনুমোদনের এক দিন পর ঋণের চুক্তি সইয়ের নজির খুব নেই। প্রায় একই ধরনের কর্মসূচি সাবপ্রোগ্রাম-১ এর আওতায় আগেই এডিবির কাছে ২৫ কোটি ডলার বাজেট পাওয়া গেছে। এআইআইবির ঋণও গত মঙ্গলবার অনুমোদন করা হয়।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতি সাম্প্রতিক সময়ে চাপের মুখে আছে। বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীদের এই বাজেট সহায়তা রিজার্ভ কিছুটা বাড়াতে সহায়তা করবে। গত এক বছরে বাংলাদেশের রিজার্ভ ১২ বিলিয়ন ডলার কমে ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে। রিজার্ভ সুরক্ষার পাশাপাশি অগ্রাধিকার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকার উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে বাজেট সহায়তা চায়। আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপিতে ৮৯ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা পরিমাণ বিদেশি ঋণ পাওয়ার আশা করছে সরকার। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বাজেট সহায়তা হিসেবে পাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার।
পূর্বকোণ/আরআর/এএইচ