বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বড় বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি আরব। স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভালো অবস্থানের কারণে বাংলাদেশে বড় অংকের বিনিয়োগে আগ্রহী মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ শীর্ষ অর্থনীতির দেশটি।
মঙ্গলবার (২৩ মে) কাতারে হোটেল ওয়ালডর্ফ অ্যাস্তোরিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিহ এবং সৌদি অর্থনীতি ও পরিকল্পনামন্ত্রী ফয়সাল আলিব্রাহিম এ প্রস্তাব দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। খবর বাসস।
দুই সৌদি মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, তারা বলেছেন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা কয়েকটি ইস্যু দেখি। প্রথমত, দেশের স্থিতিশীলতা, ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের ভবিষ্যত দেখেন, স্থিতিশীলতা দেখেন। বাংলাদেশের বর্তমান এবং ভবিষ্যত ভালো। তাই আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সৌদি আরবের দুই মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নেতৃত্ব খুবই ভালো, তাদের ভিশন এবং কমিটমেন্টস খুবই ভালো। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুব ভালো এবং স্থিতিশীল সরকার রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, সৌদির দুই মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনা করে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশকে তাদের বেশ কিছু পণ্যের প্রধান আঞ্চলিক বিতরণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যদি বাংলাদেশকে সৌদি আরব আঞ্চলিক বিতরণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে তাহলে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং অন্যান্য দেশে সরবরাহ করতে পারবে।
ড. মোমেন বলেন, সৌদি মন্ত্রীরা জানান, তারা বাংলাদেশকে পেট্রোকেমিক্যাল, ডিজেল, বিমানের জ্বালানি, সারসহ বিভিন্ন পণ্যের প্রধান বিতরণ কেন্দ্র করতে চান। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই সৌদি মন্ত্রীকে জানান, তিনি ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় অনুমতি দিয়েছেন এবং শিগগিরই তাদের (সৌদি আরব) কাজ শুরু করতে বলেন।
এসময় শেখ হাসিনা মাতারবাড়ি, পায়রা বন্দর ব্যবহার এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দেন সৌদি আরবকে।
বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ সহজ করতে যদি কোনো বাধা থাকে, তাহলে তা দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সৌদি মন্ত্রীদের আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থে কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করে সৌদি আরব। বৈঠকে সৌদি মন্ত্রীরা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও কারিগরি খাতে সহায়তা করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
হজ বিষয়ে আলাপকালে সৌদির দুই মন্ত্রী তাদের দেশে আবাসন এবং হাসপাতাল নির্মাণে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ করার অনুরোধ করেন। দুই দেশের জনগণের স্বার্থে সৌদি আরবে ওষুধ, পানীয় এবং রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠা করতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন সৌদি মন্ত্রীরা।সৌদির দুই মন্ত্রী বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের প্রশংসা করেন।
পূর্বকোণ/পিআর