আজি হতে শতবর্ষ আগে
কে তুমি কবি পাঠিয়েছিলে বসন্ত অভিবাদন
কবিতায় করে
অনাগত আমাদের-ই তরে
আজি হতে শতবর্ষ আগে।
শতবর্ষ পর তোমার কবিতাখানি
পড়িতেছি মোরা কৌতুহলভরে
শত অনুরাগে।
আজি ১৪২৬-এর নববসন্তের প্রভাতে
হে কবি, সুদূর দিগন্তের পানে চাহি
কল্পনায় অবগাহি
ভাবিতেছি মনে মনে,
একদিন শতবর্ষ আগে
এমনি এক নবীন ফাল্গুন দিনে
চঞ্চল দক্ষিণ সমীর
প্রকৃতি স্পর্শিয়া পুষ্পরেণু গন্ধ মাখিয়া
সহসা রাঙায়ে দিয়াছিল ধরা নানা রঙে
যৌবন রাগে, অপরূপ সাজে
শত বিহঙ্গের কলতানে
ভরিয়া উঠিয়াছিল তোমা হৃদয় মগন গানে
সেদিন উতলা প্রাণে
হে কবি, তুমি স্মরণ করেছিলে মোদের
অনুরাগভরে
আজি হতে শতবর্ষ আগে।
আজি তোমা হতে শতবর্ষ পরে
হে কবি, মানব যাতনে
ধরণী আজ উম্মত্ত অস্থীর
শীত-বসন্তের ফারাক অস্ফুষ্টপ্রায়
রাশি রাশি ইটের দালানের মাঝে
প্রকৃতি বিবর্ণ নিষ্প্রাণ
সবুজ পল্লবরাশি ধূলায় ধূসর
চঞ্চল প্রজাপতির ডানায় ভ্রমর
গুঞ্জণে পুষ্পরেণু গন্ধমাখা
উত্তাল দক্ষিণা হাওয়ায়
গাছে গাছে নবমঞ্জুরি ছড়িয়ে আসে না বসন্ত
ক্যালেন্ডারের পাতাধরে আসে নবীন ফাল্গুন দিন
নগরী জেগে উঠে তরুণ-তরুণীদের বাসন্তী সাজে
নানা রঙের রাশি রাশি ফুল প্রকৃতিতে নয়
ভরে থাকে ফুলের দোকানের রেকে ঝুড়িতে
চড়া বিনিমিয়ে মেলে পুস্পগন্ধহীন ফুল
রমরমা বসন্ত বাণিজ্যে মেতে উঠে চারপাশ
ফেসবুক-পত্রিকা ভেসে যায় বসন্ত অভিবাদনে
অনুরাগে সিক্ত করে
আসে না কোন ফুল
বিহঙ্গের কোন গান বা কোন রক্তরাগ
তাইতো এখন কবি আক্ষেপে গায়-
‘ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক
আজ বসন্ত’
আজি হতে শতবর্ষ পরে
কেউ যদি পড়ে থাকো আমার কবিতাখানি
আগ্রহভরে-
আজকের বসন্তের অভিবাদন পাঠিয়ে দিলাম তোমাদের করে
তোমাদের বসন্ত শুরু হোক প্রকৃতিকে সাজিয়ে
তোমাদের মনকে রাঙিয়ে
চঞ্চল দক্ষিণা হাওয়ায় ধরণীকে মাতিয়ে
ভ্রমর-বিহঙ্গের পুলক জড়িয়ে
রাশি রাশি আনন্দ ছড়িয়ে
তোমাদের সেই নবীন ফাল্গুন দিনে
আমার বসন্তের এই আনন্দ অভিবাদন পৌঁছাক তোমাদের ঘরে।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ