চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

ফাইল ছবি

রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় তেলের দাম বাড়লো ৫ শতাংশ

অনলাইন ডেস্ক

২৩ অক্টোবর, ২০২৫ | ৭:২৪ অপরাহ্ণ

রাশিয়ার প্রধান দুটি তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকওয়েলের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ৫ শতাংশ বেড়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের মূল্য বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৫ দশমিক ৯৮ ডলার হয়েছে, যা ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম বেড়ে ৬১ দশমিক ৮১ ডলারে পৌঁছেছে, যা ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি।

স্যাক্সো ব্যাংকের জ্বালানি বিশ্লেষক ওলে হ্যানসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে চীন ও ভারতের পরিশোধনাগারগুলোকে বিকল্প সরবরাহকারীর সন্ধান করতে হবে। নয়তো পশ্চিমা ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে তারা।

 

ওয়াশিংটন জানিয়েছে, মস্কো যদি অবিলম্বে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হয় তবে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ব্রিটেন গত সপ্তাহেই রসনেফট ও লুকওয়েলের বিরুদ্ধে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাশিয়ার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার ১৯তম প্যাকেজ অনুমোদন করেছে।

 

নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসার পরপরই ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআই তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ২ ডলারের বেশি বেড়ে যায়। এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রে তেল মজুত কমে যাওয়ার খবরও ভূমিকা রাখে।

ইউবিএসের বিশ্লেষক জিওভানি স্টাউনোভোর মতে, নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মূলত নির্ভর করবে ভারতের প্রতিক্রিয়া ও রাশিয়া নতুন ক্রেতা খুঁজে পায় কি না তার ওপর। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ভারত সমুদ্রপথে রাশিয়ার ছাড়মূল্যের তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হয়ে ওঠে।

 

তেল খাতের সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতীয় তেল পরিশোধনাগারগুলো রুশ তেল আমদানি ব্যাপকভাবে কমাতে পারে। ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি রিফাইনার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ সম্পূর্ণভাবে রুশ তেল কেনা বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে।

 

তবে বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাগুলো তেলের সরবরাহ ও চাহিদায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। রিস্ট্যাড এনার্জির বিশ্লেষক ক্লাউদিও গালিমবার্তি বলেন, গত সাড়ে তিন বছরে রাশিয়ার ওপর যত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার কোনোটিই উৎপাদন বা রাজস্বে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।

 

তবে ওপেক প্লাসের উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কারণে সরবরাহ উদ্বৃত্তের আশঙ্কায় তেলের দামের ঊর্ধ্বগতি কিছুটা সীমিত থাকে। ইউবিএসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম নিকট ভবিষ্যতে ব্যারেলপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ ডলারের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে।

 

মার্কিন জ্বালানি তথ্য সংস্থা ইআইএ জানিয়েছে, দেশটিতে গত সপ্তাহে অপরিশোধিত তেল, পেট্রল ও ডিজেলের মজুত কমেছে, যা পরিশোধন কার্যক্রম ও জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

 

পূর্বকোণ/আরআর

শেয়ার করুন