চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

সর্বশেষ:

অনেক দূর এগিয়ে গেছে চীন

থমাস এল ফ্রায়েডম্যান, নিউ ইয়র্ক টাইমস কলামিস্ট

৮ এপ্রিল, ২০২৫ | ৩:৪৫ অপরাহ্ণ

কোন ‘টুমরোল্যান্ডে’ যাব আমি? সাংহাই ডিজনিল্যান্ডে আমেরিকান ডিজাইনের নকল টুমরোল্যান্ডে নাকি চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট হুয়াওয়ে-নির্মিত বিশাল নতুন গবেষণা কেন্দ্র ‘আসল টুমরোল্যান্ডে’? প্রায় ২২৫টি ফুটবল মাঠের সমান হুয়াওয়েরটিতেই আমি গিয়েছিলাম।

এটি ছিল একাধারে মনোমুগ্ধকর এবং চিত্তাকর্ষক কিন্তু একইসঙ্গে বিরক্তিকরও। ক’ দশক ধরে চীনে কাজ করা একজন মার্কিন ব্যবসায়ী বেইজিংয়ে আমাকে বলেছিলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন মানুষ ‘ভবিষ্যত’ দেখতে আমেরিকায় যেতো- এখন তারা এখানে আসে।’ সত্যিই যেন তাই।

আমি এই হুয়াওয়ে ক্যাম্পাসের মতো কিছু কখনও দেখিনি। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নির্মিত, এ স্থাপনায় ১০৪টি স্বতন্ত্রভাবে নকশা করা ভবন রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ম্যানিকিউর করা লন, ডিজনির মতো মনোরেল দ্বারা সংযুক্ত, ৩৫,০০০ জন বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী এবং অন্যান্য কর্মীদের জন্য আবাসন ল্যাব, ১০০টি ক্যাফে ও ফিটনেস সেন্টার এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। এসবকিছুই চীনা এবং বিদেশি প্রযুক্তিবিদদের আকর্ষণ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ২০১৯-এ হুয়াওয়েতে সেমিকন্ডাক্টরসহ মার্কিন প্রযুক্তি রপ্তানি সীমিত করে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু চীনা সরকারের সহায়তায় কোম্পানিটি ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়ায়। মার্কিন ওই নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত বছর হুয়াওয়ে ‘মেট ৬০’ সিরিজ, উন্নত সেমিকন্ডাক্টর দিয়ে সজ্জিত একটি স্মার্টফোন চালু করে বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, হুয়াওয়ে বিশ্বের প্রথম ট্রিপল-ফোল্ডিং স্মার্টফোন নিয়ে আসে এবং অ্যাপল এবং গুগলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার জন্য নিজস্ব মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম, হংমেং (হারমনি) উন্মোচন করে।
কোম্পানিটি বৈদ্যুতিক যানবাহন, স্ব-চালিত গাড়ি, খনির সরঞ্জাম থেকে শুরু করে মানবকে প্রতিস্থাপন করতে পারে-এমন সবকিছুর জন্য এআই প্রযুক্তি তৈরির ব্যবসায়ও নেমে পড়ে। হুয়াওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে শুধুমাত্র ২০২৪ সালে তারা চীন জুড়ে তাদের বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য ১০০,০০০ দ্রুত চার্জার স্থাপন করেছে; বিপরীতে, ২০২১ সালে মার্কিন কংগ্রেস চার্জিং স্টেশনের নেটওয়ার্কের জন্য ৭.৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছিল, কিন্তু নভেম্বর পর্যন্ত এই নেটওয়ার্কে ১২টি রাজ্যে মাত্র ২১৪টি কার্যকরী চার্জার স্থাপন করতে পেরেছে তারা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন আমেরিকায় ‘ট্রান্সজেন্ডার’ ইস্যু নিয়ে ব্যস্ত, চীন তখন তার কারখানাগুলিকে এআই-এ রূপান্তরিত করার ওপর মনোনিবেশ করেছে, যাতে এটি আমাদের (মার্কিন) সমস্ত কারখানাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। ট্রাম্পের ‘মুক্তি দিবস’ কৌশল হল- শুল্ক দ্বিগুণ করা এবং মার্কিন উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে এমন আমাদের জাতীয় বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান এবং কর্মশক্তিকে ধ্বংস করা। চীনের মুক্তির কৌশল হলো আরও গবেষণা ক্যাম্পাস খোলা এবং ট্রাম্পের শুল্ক থেকে স্থায়ীভাবে মুক্ত হওয়ার জন্য এআই-চালিত উদ্ভাবনের দ্বিগুণ ব্যবহার করা।

আমেরিকার প্রতি বেইজিংয়ের বার্তা স্পষ্ট- ‘আমরা তোমাদের ভয় পাই না। তোমরা যা ভাবো তোমরা তা নও- এবং আমাদেরও তোমরা যা ভাবো আমরা তা নই।’

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, হুয়াওয়ের গত বছর দ্বিগুণেরও বেশি নিট মুনাফা হয়েছে- নি:সন্দেহে যা একটি অত্যাশ্চর্য প্রত্যাবর্তন। আজ আমরা যারা (বিশেষ করে মার্কিন আইন প্রণেতাগণ) চীনের নিন্দা করতে চাই, আমার মনে হয় ‘এই আমাদের’ তার আগে ভালোমতো হোমওয়ার্ক করে আসাটা জরুরি।

আমি নির্মমভাবে সৎ হয়ে আমার দেশপ্রেম প্রকাশ করতে পছন্দ করি। আমাদের দুর্বলতা এবং শক্তি কিংবা চীনের দুর্বলতা এবং শক্তি সম্পর্কে আমি সম্যক অবহিত। এবং আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের উভয়ের জন্য সেরা ভবিষ্যতটি হলো- (বিশেষ করে এআই বিপ্লবের এ সময়ে) চীনা পুঁজি এবং প্রযুক্তির সঙ্গে অংশীদারিত্বে আমেরিকান শ্রমিকদের দ্বারা তৈরি আমেরিকান পণ্য-সম্ভার। নি:সন্দেহে এটা ব্যাখ্যার দাবি রাখে।

ট্রাম্পের জাদুকরী চিন্তাভাবনা

আমি তার প্রথম মেয়াদে চীনের ওপর শুল্কের বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে একমত হয়েছিলাম। চীন কিছু মার্কিন পণ্য এবং পরিষেবাকে বেশ কিছুদিন ধরেই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছিল। উদাহরণস্বরূপ, বছরের পর বছর ধরে মার্কিন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার অনুমতি ছিল না চীনে। এটা তারা করেছিল তাদের নিজস্ব পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মগুলিকে বাজারে সম্পূর্ণভাবে আধিপত্য বিস্তার করার সুযোগ দিতে। এখন কার্যত তাই হয়েছে। এ মুহূর্তে কেউ মার্কিন ভিসা কার্ড ব্যবহার করতে চাইলে তাকে এটিকে চীনের আলিপে বা উইচ্যাট পে-এর মতো অ্যাপগুলির মধ্যে একটির মাধ্যমে সংযুক্ত করতে হয়। এদের সম্মিলিতভাবে ৯০ শতাংশেরও বেশি বাজার শেয়ার রয়েছে। মেক্সিকো এবং ভিয়েতনাম হয়ে আমেরিকায় চীনা পণ্যের প্রবেশের ওপর শুল্কারোপকেও আমি সমর্থন করি। এর ফলে আশা করা যায় মার্কিন কোম্পানিগুলো কিছুটা লাভবান হবে। মার্কিন গ্রাহকদের ওপর তেমন কোনোও করের বোঝাও পড়বে না। তবে ব্যাপারটা হতে পারে সাময়িক। কেননা আজ প্রতিটি জটিল পণ্য-গাড়ি থেকে আইফোন কিংবা এমআরএনএ ভ্যাকসিন-সবকিছুই উৎপাদিত হচ্ছে বৈশ্বিক পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে। এ কারণেই পণ্যগুলি ধীরে ধীরে উন্নত এবং সস্তা হয়ে ওঠে। বিশ্ববাজারের যে কোনোও পণ্যই আজ এই ‘পারস্পরিক সহযোগিতা’ (সেটা অর্থ, প্রযুক্তি যা-ই হোক না কেন) ছাড়া উৎপন্ন কিংবা বাজারজাত করার কথা কেউই ভাবেনা। এ সময়ে এসে আমেরিকান কোম্পানিগুলির তাদের নির্ভরশীল বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলগুলি প্রতিস্থাপন করতে এবং আমেরিকায় সবকিছু তৈরি করতে বছরের পর বছর সময় লেগে যাবে। এমনকি টেসলাকেও কিছু যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হয়!

একসময় চীন হয়তো কিছু প্রযুক্তি চুরি করেছে, কিংবা নকল করেছে- তাই বলে এটা ভাবার দিন শেষ হয়ে গেছে যে, চীনা পণ্য মানেই সস্তা, মানহীন। আজকের চীনা পণ্য একাধারে সস্তা, উন্নত, স্মার্ট এবং ক্রমবর্ধমানভাবে এআই-সংশ্লিষ্টও।

 

চীনের ফিটনেস ক্লাবের ভিতরে

চীন ‘স্টেম’ (এসটিইএম- সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথমেটিক্স) শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছে বেশি করে। প্রতি বছর, দেশটি প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন ‘স্টেম’ স্নাতক তৈরি করে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সকল শাখায় সহযোগী, স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি প্রোগ্রাম থেকে স্নাতকদের সংখ্যার সমান।

যখন আপনার এত ‘স্টেম’ স্নাতক থাকে, তখন আপনি যেকোনো সমস্যায় অন্য যে কারো চেয়ে বেশি প্রতিভা দেখাতে পারেন। টাইমস বেইজিং ব্যুরো প্রধান কিথ ব্র্যাডশার গত বছর রিপোর্ট করেছিলেন- ‘চীনের ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন শিল্পের জন্য প্রকৌশলী এবং গবেষকদের প্রশিক্ষণের প্রোগ্রাম রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাঝে মাঝে এসব কোর্স-সুবিধা দিয়ে থাকে।’ অনেক চীনা প্রকৌশলীই এম.আই.টি.- স্তরের দক্ষতা নিয়ে স্নাতক নাও হতে পারেন, তবে তাদের বিশ্বমানের প্রকৌশলী অনেকেই আছেন। সেখানে ১.৪ বিলিয়ন মানুষ রয়েছে। এর মানে হল, চীনের সঙ্গে বহির্বিশে^র প্রতিভাবান লোকের অনুপাতটি দাঁড়ায়- ১৪০০ : ১।

চীনা বৃত্তিমূলক স্কুলগুলি প্রতি বছর হাজার হাজার ইলেকট্রিশিয়ান, ওয়েল্ডার, মেকানিক এবং প্লাম্বারকে স্নাতক করে। যখন এদের কারও কাছে একটি নতুন পণ্যের ধারণা থাকে এবং সে একটি কারখানা স্থাপন করতে চায়, তখন তা দ্রুতই পৃষ্ঠপোষকতা পায়। যোগাযোগব্যবস্থায়ও চীন ঈর্ষণীয়ভাবে এগিয়ে। দেশটির ৫৫০টিরও বেশি শহর আজ হাই-স্পিড রেলের মাধ্যমে সংযুক্ত।

যদি আমরা কোনও শুল্ক প্রাচীরের পিছনে একই রকম ফিটনেস ক্লাব তৈরি না করতে পারি, তাহলে আমাদের দেশে কেবল মুদ্রাস্ফীতি এবং স্থবিরতা দেখা দেবে। আপনি সমৃদ্ধির পথে আপনার পথ তৈরি করতে পারবেন না, বিশেষ করে এআই- এর এ ভোরে। চীনের এআই উদ্ভাবকরা অনেক কম বিশেষায়িত মার্কিন চিপ ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব ওপেন-সোর্স এআই ইঞ্জিন, ‘ডিপসিক’ তৈরি করার ক্ষমতা প্রদর্শন করেছেন।

বেইজিং বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না
যদিও চীনের সমস্ত শক্তি থাকা সত্ত্বেও, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না। চীনের অনেক মধ্যবিত্ত মানুষ এখন অসন্তুষ্ট। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে, অনেক চীনা তাদের সঞ্চয় ব্যাংকগুলিতে রাখার পরিবর্তে অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য তাদের অর্থ বিনিয়োগ করেছে যেখানে কার্যত কোনও সুদ দেওয়া হয়নি। এটি একটি বিশাল আবাসন বুদবুদ তৈরি করেছে। ২০২০ সালে সরকার যখন রিয়েল এস্টেট ঋণ কঠোর করে, তখন অনেকেই এটিকে আরও বাড়িয়ে আবার ভেঙে ফেলে। তাই তারা তাদের নগদ অর্থ জমা করছে কারণ তাদের রিয়েল এস্টেট লাভ শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু সরকারি পেনশন এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদান খুবই কম। প্রত্যেককেই বৃষ্টির দিনের জন্য সঞ্চয় করতে হবে।

সংক্ষেপে
চীনের ফিটনেস ক্লাব দুর্দান্ত, কিন্তু বেইজিংয়ের এখনও ট্রাম্পের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি প্রয়োজন যা তার রপ্তানি ইঞ্জিনকে সুরক্ষিত করবে। ঠিক আমাদেরও তাই। তবে ট্রাম্প এতটাই অপ্রত্যাশিত অভিনেতা হয়ে উঠেছেন, প্রতি মুহূর্তে নীতি পরিবর্তন করছেন, যে চীনা কর্মকর্তারা সত্যিই ভাবছেন- তারা কী তার সঙ্গে এমন কোনও চুক্তি করতে পারবেন যা তিনি মেনে চলবেন?

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচনার বিশেষজ্ঞ মিশেল গেলফান্ড বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে- বিশৃঙ্খলা নয়, আস্থাই স্থায়ী ফলাফল দেয়। চুক্তি তৈরির ক্ষেত্রে ট্রাম্পের জয়-পরাজয় পদ্ধতি একটি বিপজ্জনক খেলা। যদি তিনি বেপরোয়াভাবে মিত্রদের প্রতিপক্ষ এবং আলোচনাকে যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করতে থাকেন, তাহলে আমেরিকা কেবল খারাপ চুক্তিই নয় বরং এমন একটি বিশ্বের ঝুঁকিতে পড়বে যেখানে মোকাবেলা করার জন্য আমাদের সামনে আর কেউ থাকবে না।’

আমার মনে হয়, একমাত্র যথার্থ চুক্তিটি হল-মেড ইন আমেরিকা, আমেরিকান কর্মীদের দ্বারা, চীনা প্রযুক্তি, মূলধন এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে। অর্থাৎ, আমরা কেবল ১৯৯০-এর দশকে চীন ধনী হওয়ার জন্য যে কৌশলটি ব্যবহার করেছিল তা উল্টে দিচ্ছি, যা ছিল- মেড ইন চায়না, চীনা শ্রমিকদের দ্বারা, আমেরিকান, ইউরোপীয়, কোরিয়ান এবং জাপানি প্রযুক্তি, মূলধন এবং অংশীদারদের সঙ্গে।

৩০ বছর ধরে চীনে বসবাসকারী একজন ব্যবসায়িক পরামর্শদাতা জিম ম্যাকগ্রেগর আমাকে এটি ব্যাখা করেছেন-বড় বড় মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিগুলি আগে চীনে যেত এবং চীনা বাজারে প্রবেশের জন্য একটি চীনা কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করত। এখন বিদেশি কোম্পানিগুলি চীনা বহুজাতিক কোম্পানিগুলিকে বলছে, যদি তোমরা ইউরোপে প্রবেশ করতে চাও, তাহলে আমাদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করো এবং তোমাদের প্রযুক্তি নিয়ে আসো।

অবশ্যই, আস্থা পুনর্নির্মাণের জন্য একটি বিশাল প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে, যা এখন সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রায় সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত। যুক্তিসঙ্গতভাবে যথার্থ বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর এটিই একমাত্র উপায়।

‘হাউ : হোয়াই হাউ উই ডু এনিথিং মিনস এভরিথিং’ বইয়ের লেখক ডভ সিডম্যান যেভাবে এটি বর্ণনা করেছেন তা আমার পছন্দ। তিনি আমাকে বলেছিলেন, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন – এবং সমগ্র বিশ্বের কথা আসে- তখন ‘আন্ত:নির্ভরতা’ আর আমাদের পছন্দ নয়। এ-ই আমাদের অবস্থা। আমাদের ভাবতে হবে, আমরা কি ‘সুস্থ আন্ত:নির্ভরতা’ তৈরি করব এবং একসাথে উঠব, নাকি ‘অস্বাস্থ্যকর আন্ত:নির্ভরতা’ বজায় রাখব এবং একসঙ্গেই অধ:পতিত হব।’

কিন্তু যাই হোক না কেন, আমরা এটি একসঙ্গেই করছি। উভয় দেশের নেতারা এটা জানেন। প্রয়োজনে, তারা এটা আবারও শিখবেন। আমার মনে একটাই প্রশ্ন- যখন তারা তা করবে, তখন একসময়ের ঐক্যবদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির কী অবশিষ্ট থাকবে যেটা উভয় দেশের জন্য এত সম্পদ তৈরি করেছিল? (ভাবানুবাদ)
[সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস]

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট