চট্টগ্রাম সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

সর্বশেষ:

যুদ্ধের মধ্যেই ট্রাম্পের সাথে বৈঠক করতে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৭ এপ্রিল, ২০২৫ | ১:২৯ অপরাহ্ণ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে নিরলস হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। বর্বর ও নির্বিচার এই হামলার মধ্যেও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ভূখণ্ডটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। চলমান যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠক করতে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন।

 

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের মারাত্মক হামলার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই সংকটকালীন সময়ে নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফর অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যা গাজা যুদ্ধ, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে।

 

সোমবার (৭ এপ্রিল) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রবিবার হাঙ্গেরি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এই সফরে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের সাথে বৈঠক করবেন। বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হবে গাজায় চলমান যুদ্ধ, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণ, যুদ্ধের অবসান এবং বন্দিদের মুক্তি। এছাড়া, ইরান ও সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

এছাড়া, নেতানিয়াহু মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকের সাথে দেখা করবেন। লুটনিক ট্রাম্পের শুল্ক নীতি তত্ত্বাবধান করেন। সম্প্রতি ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যে ১৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা নিয়ে নেতানিয়াহু এবং লুটনিকের বৈঠক হবে। এই বৈঠকটি ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়ন ও শুল্ক নীতি সমন্বয় করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

 

নেতানিয়াহু তার স্ত্রী সারাকে নিয়ে রবিবার রাতেই ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছান এবং সেখানে ব্লেয়ার হাউসে গিয়েছেন। সেখানে মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করার কথা রয়েছে। তাছাড়া, নেতানিয়াহুর এই সফর দুই দিনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, চ্যানেল ১২ জানিয়েছে যে সফরের সময়সীমা বাড়ানো হতে পারে। এই সফরটি বিশেষভাবে পরিকল্পিত হয়েছিল নেতানিয়াহু, ট্রাম্প এবং হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা পরিপ্রেক্ষিতে।

 

গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে নেতানিয়াহুর এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ৫০ হাজার ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন, এবং ইসরায়েলি হামলার ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু গাজার ওপর আক্রমণ আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন, যা বিশ্বজুড়ে আরও তীব্র প্রতিবাদের সৃষ্টি করেছে।

 

বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলের এই আগ্রাসনকে ঘিরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলা চলমান রয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজার যুদ্ধাপরাধের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এমন সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে নেতানিয়াহুর বৈঠক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিতে পারে।

তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন